নওগাঁয় স্বামীর স্বীকৃতি চেয়ে মৌসুমী খাতুন নামের এক নারী সংবাদ সন্মেলন করেছে। ভুক্তভোগি ওই নারী সোহেল রানা চয়েন নামের এক ছেলেকে বিয়ে করেছিলেন। করেছেন দীর্ঘ দুই বছর সংসারও করেছেন বলে জানান।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুুপুরে শহরের একটি রেস্টুরেন্টের হলরুমে তিনি স্ত্রীর মর্যদা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকারি চাকরির জন্য টাকা নিয়ে, চাকরি হওয়ার পর তাকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করছেন সোহেল রানা। স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।
ভূক্তভোগী মৌসুমী খাতুন নওগাঁ শহরের কোমাইগাড়া (কাটিয়াপাড়া) মহল্লার মনছুর আলীর মেয়ে। আর অভিযুক্ত সোহেল রানা চয়ন শহরের কোর্ট চত্বরে এলাকার মমিনুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে তিনি হাঁপানিয়া- বক্তারপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারি হিসেবে কর্মরত আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মৌসুমী খাতুন বলেন, ২০২২ সালে সোহেল রানা চয়নের সাথে পারিবারিকভাবে ইসলামী শরিয়া মতে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর শুরু হয় নির্যাতন। প্রায় মারপিটসহ মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা। এমনকি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাও নিতে হয়েছে একাধিকবার। এসব নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে, তালাকসহ হত্যার হুমকি দেওয়া হতো। তারপরও পরিবারের সুখের কথা চিন্তা করে সকল অন্যায় নির্যাতন সহ্য করে সংসার করছিলেন। এক পর্যায়ে তার পরিবারের কুপরামর্শে আবারো নির্যাতন ও মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে বোনের বাড়ি গিয়ে আশ্রয় নেন তিনি। তার কিছুদিন পরে তার স্বামী সোহেল রানা আবারো যোগাযোগ করে এবং তার ভুল হয়েছে স্বীকার করে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার পরিবারের কাছে গোপনে রেখে, তার সাথে আবারও সংসার শুরু করেন।
মৌসুমি বলেন, সোহেল রানা চাকরি পেলে আলাদা ভাবে সংসার শুরু করবে এই আশ্বাস দিয়ে, মৌসুমির ফুফুর বাসায় এবং বোনের বাসায় এসে তার সাথে গোপনে সংসার করে। এবং বিষয়টি তার পরিবারের কাছে গোপন রাখতে বলে। এইভাবে এক বছর সংসার করার পর, এরই মাঝে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যরা জোরপূর্বকভাবে তার গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করে দেয়। তারপরও সংসার করে আসছিলো বলে জানান।
একপর্যায়ে ভূমি অফিসে চাকরির জন্য তার বাবা এবং বোনের কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়ে দেয়। এর কিছুদিন পরে, স্বামীর ভূমি অফিসে অফিস সহকারি পদে চাকরি হয়। চাকরি পাওয়ার পর থেকে তার আসল রুপ শুরু হয়। সে মৌসুমির সাথে আবারো বৈরী আচরণ শুরু করে। এর মাঝে জানতে পারেন, তার স্বামী তার অজান্তেই দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। বিষয়টি জানার পর খোঁজ নিতে বড় বোনকে সাথে নিয়ে সে স্বামীর বাড়ি গেলে, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ দেড় বছর আগে তালাক দিয়েছে বলে জানান এবং বাড়ী থেকে বের করে দেয়। এ পর্যন্ত তার স্বামী চয়নকে গহনা, আসবাব পত্র ও চাকরির জন্য নগদ টাকাসহ মোট ৭লাখ টাকার মত দিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান।
স্বামীর সংসারে ফিরে যাবার জন্য তিনি বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেও কোন উপায় না পেয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আদালতে দুটি মামলা করেছেন। কিন্তু স্বামীর বড় ভাই নয়ন বিভিন্নভাবে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এবং ডিসি অফিসে চাকরি করে এমন পরিচয় দিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করে আসছেন বলে জানান। তাই দ্রুত প্রশাসনের কাছে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে সঠিক বিচারের দাবি জানান দাবীও জানান তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে, মৌসুমী এক সময় স্ত্রী ছিল, স্বীকার করে অভিযুক্ত সোহেল রানা চয়ন বলেন, সে তাকে তালাক দিয়েছে এবং এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান আছে। তিনি বলেন, এখন আদালতের মাধ্যমেই বিষয়গুলো সমাধান করা হবে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সঠিক নয় বলেও তিনি জানান।