ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারালেন ২১ ফিলিস্তিনি

 

ছবি : সংগৃহীত

ত্রাণ সহায়তা নিতে গিয়ে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

বুধবার (১১ জুন) দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ত্রাণ সংগ্রহে গিয়ে অন্তত ২১ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

সহায়তা কেন্দ্রগুলোর আশপাশে যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর সঠিক প্রেক্ষাপট তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। অথচ, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, বুধবার ভোরে মধ্য গাজায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দিকে সতর্কতামূলক গুলি ছুড়েছে তারা। তবে দক্ষিণ গাজায় প্রাণহানির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি তারা।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ শহরের কাছে ত্রাণ সহায়তা নিতে যাওয়ার পথে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে নেওয়া হয়।

মধ্য গাজার আল-আওদা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ত্রাণ সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে আরও ৭জন নিহত হয়েছেন। আল-শিফা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের মধ্যে রয়েছেন অনেক নারী ও কিশোর, যারা সহায়তা নিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

সাফা ফারমাওয়ি নামে একজন ফিলিস্তিনি নারী জানান, তার ১৬ বছরের মেয়ে গাজাল ইয়াদ রাফাহতে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে।

দুঃখভারাক্রান্ত মনে তিনি বলেন, “আমি আর মেয়ে দুজনেই সহায়তা নিতে গিয়েছিলাম। ও আগে গিয়েছিল। পরে খুঁজেও ওকে পাইনি। তখন লোকজন বলল, তোমার মেয়ে শহীদ হয়েছে।
মার্কিন-সমর্থিত ত্রাণ ব্যবস্থা চালু পরই হচ্ছে এমন হামলা।”

জাতিসংঘ স্বীকৃতি না পাওয়া একটি নতুন সংস্থা সহায়তা বিতরণ চালু করার পর থেকে প্রতিদিনই ত্রাণ নিতে যাওয়া ব্যাক্তিদের লক্ষ্য করে গুলির ঘটনা ঘটছে। প্রত্যক্ষদর্শী ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী ত্রাণ নিতে যাওয়া জনতার ভিড়ে গুলি চালাচ্ছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, একটি হামলায় তাদের অন্তত ৫ জন স্থানীয় সহায়তাকর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় হামাসকে দায়ী করেছে ফাউন্ডেশনটি।

তাদের দাবি- সহায়তাকর্মীরা তাদের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে হামলার শিকার হয়েছেন। তবে বিতরণকেন্দ্রগুলোর আশপাশে কোনো ধরনের সহিংসতার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছে সংগঠনটি।

ইসরায়েলের পরিচালিত নতুন এই ত্রাণ ব্যবস্থার সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা। হামাসকে সহায়তা না দিয়ে ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর এই বিষয়টিকে তারা মানবিক নীতিমালার পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে।

হামাসকে ত্রাণ চুরি থেকে বিরত রাখতে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। নিজেদের বক্তব্যের পক্ষে তারা কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। যদিও এই চুরির বিষয়টি অস্বীকার করেছে জাতিসংঘ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন