আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের দিয়ে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককের অপসারণসহ বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেণে অভিভাবকরা।
বৃহস্পতিবার সকালে ফুলবাড়ী গোলাম মোস্তফা (জিএম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হোসেনের অপসারণসহ তার বিচারের দাবি নিয়ে সমবেত হন অভিভাবকরা। পরে তারা বিক্ষোভ করেন।
অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তোজাম্মেল হোসেন বিদ্যালয়ে আগত শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ রেখে নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য ফুলবাড়ী পৌর মেয়র মাহমুদ আলম লিটনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভসহ মানববন্ধন করিয়েছেন। যা সম্পূর্ণ নিয়মবর্হিভূত। প্রধান শিক্ষকের সাথে মেয়র কি হয়েছে তা আমরা জানি না। কিন্তু আমাদের শিশুদেরকে কেনো তাদের দ্বন্দ্বের জেরে রাস্তায় নামিয়ে মানববন্ধন করানো হলো?
অভিভাবক মো. মুকুল, শাহানুর আলম ও মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাচ্চারা স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে কান্নাকাটি করছিল। পরে জানতে পারি প্রধান শিক্ষক তাদেরকে জোরপূর্বক প্রচ- গরম ও রোদের মধ্যে ঢাকা-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে মানববন্ধনে অংশ নিতে বাধ্য করেছেন।
তারা আরও বলেন, যদি ওই সময় আমাদের বাচ্চাদের কোনোপ্রকার ক্ষতি হতো বা অঘটন ঘটতো তাহলে এর দায়ভার কে নিতো? আমরা বাচ্চাদেরকে বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছি পড়ালেখা করতে। কোনো আন্দোলন করতে তো পাঠাইনি তবে কেনো প্রধান শিক্ষক ও মেয়রের দ্বন্দ্বে বাচ্চাদেরকে জড়ানো হলো। তারা তো দ্বন্দ্ব সম্পর্কেও কিছু জানে না। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছি। একইসাথে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হোসেনের অপসারণ ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অভিভবকরা বিদ্যালয় চত্বরে প্রধান শিক্ষক মো. তোজাম্মেল হোসেনে অপেক্ষায় থেকেও তাকে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে জানা যায় তোজাম্মেল হোসেন উপজেলায় একটি মিটিং এ অংশ নিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তোজাম্মেল হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করেছে তা সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। আগের দিন রাত ১২টার পর কিছু শিক্ষার্থী আমাকে ফোন করে বলে তারা মানববন্ধন করবে। আমি বলেছি সেটা তোমাদের বিষয়। এ ছাড়া এ সম্পর্কে আমার কিছু জানা নাই। শুনেছি স্কুলে কিছু অভিভাবক গিয়েছিল। আমি উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এসএসসি পরীক্ষা সম্পর্কিত শিক্ষা অফিসের একটি আলোচনা সভায় থাকার আমি সেখানে ছিলাম। তাই অভিভাবকদের সাথে আমার দেখা হয়নি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, আমি উভয়কে নিয়ে সম্মানজনক উদ্যোগগ্রহণ করেছি। অভিভাকদের বিক্ষোভের বিষয়টি আমরা জানা নেই।
উল্লেখ্য গত ১৮ এপ্রিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে পৌর এলাকার ৪ হাজার ৬২১ জন অসহায় দুস্থের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণের জন্য জিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট কক্ষ বরাদ্দ চান পৌর মেয়র মাহমুদ আলম লিটন। বিদ্যালয়ের কক্ষ বরাদ্দ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বাকবিত-া ঘটে। তারই প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) মেয়র কর্তৃক প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের সামনে (দিনাজপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়ক) দাঁড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনসহ বিক্ষোভ করে বিদ্যালয়ে অধ্যায়ণরত শিক্ষার্থীরা। #
Tags
বাংলাদেশ