Daily News BD Online

ভোলায় ক্রেতার অপেক্ষায় তরমুজ ব্যবসায়ীরা


 মিজানুর রহমান, ভোলা প্রতিনিধিঃ

ভোলায় সপাতাহে আগে চড়া দামে তরমুজ বেচা-কেনা হলেও, (২৭ মার্চ) বুধবারের ৩-৪দিন আগ থেকে শহর ও হাট বাজারে কোন ক্রেতা নাই। ফলে পাইকার ও ব্যাপারীদের কপালে চিন্তার ভাজ পরেছে। এর মধ্যে পচন ধরতে শুরু করেছে তরমুজের। ফল ব্যবসায়ীরা, ব্যাপারী ও পাইকোরেরা বলছেন, আগে মানুষ রোজায় ইফতারিতে তরমুজ রাখতেন। এবার দাম অতিরিক্ত বেশি হওয়ায় মানুষ মুখ ফিরে নেওয়ায় বাজার দর পড়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ভোক্তাদের মাঝে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। আর কৃষকেরা চড়া মূল্যে ক্ষেতেই পাইকারদের কাছে ঠিকা বিক্রি করে দিয়েছেন বাম্পার ফলন তরমুজ। এখন তারা খোশ মেজাজে অন্য ফসল করতে ব্যস্ত রয়েছেন।
ফল ব্যবসায়ীরা,ব্যাপারী ও পাইকোরেরা জানান, রমজানকে পুজি করে পাইকার নামের এক শ্রেনীর সিন্ডিকেট তরমুজকে সোনার হরিন হিসেবে ধরতে চেয়েছিলেন, পিছু নিয়েছেন তরমুজ চাষীদের। তাদের কাছ থেকে চড়া মুল্যে তরমুজ ক্ষেত পাইকারেরা (সিন্ডিকেট) কিনে নেন। ক্ষেতে তরমুজ একটু বড় হওয়ার পরেই না পাকতেই রমজানের একসপ্তাহ আগে ক্ষেত থেকে কেটে নিয়ে গুদামে মৌজুদ করে, মেডিসিন দিয়ে সেকানেই পাকান। মজানের শুরুর দিকে তরমুজের ব্যপক চাহিদা ছিল। তখন মানভেদে প্রতি কেজি তরমুজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। দোকানগুলোয় ক্রেতাদের ভিড় থাকত। ব্যবসায়ীরাও সোনার হরিন হাতে পেয়েছিল। যারা চড়া দাম দিয়ে তরমুজ কিনে নিয়েছেন, তা তাড়া ঠিকমত খাইতে পারেননি, মিষ্টি ছিলনা তরমুজে। দ্বিতীয়বার তারা আর তরমুজের কাছে যাননি, মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তরমুজ থেকে। মানুষে চাহিদা অনেকটা কমে যায়। ফলে ১০০০ হাজার টাকা দামের তরমুজ ১০০ টাকায় নেমে আসে। কম দামে তরমুজ বিক্রি করলেও ক্রেতা মিলছে না। ভোলার আড়তে, ব্যপারী ও ফল বিক্রিতাদের কাছে, শহর ও হাট-বাজারে বড় বড় পাকা তরমুজ স্তরে স্তরে সাজানো থাকলেও ক্রেতারা তার পাশ দিয়েও হাটছেননা। তরমুজ বিক্রি না হওয়ার কারনে অনেক ব্যবসায়ীর তরমুজে পচন ধরেছে। এনজিও থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে ব্যপারীরা তরমুজ মৌজুদ করে এখন তাদের কপালে লোকশানের বড় ভাজ পরেছে।
বিল্লাল নামের এক ক্রেতা জানান, ২য় রমজানে ইফতারের সময় খাওয়ার জন্য ৮০০ টাকা দিয়ে একটি তরমুজ কিনেছিলাম,তার ওজন ছিল ৬ কেজি। তা কেটে দেখি ভিতরে সাদা, কোন মিষ্টি নেই, তার পরে আর তরমুজের কাছেই আসিনা। এখন ২২ কেজি ওজনের একটি তরমুজ ২০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে, তা ছাড়া বাজারে এখন ানেক পচা তরমুজ নিয়ে ব্যবসায়ীরা বসে আছে। স্বপন নামের এক পরিচ্ছন্নতা কর্মী জানান, গভীর রাতে ব্যপারীরা পচা তরমুজ গাড়ি ভরে খালে ফেলার চেষ্টা করে, তাদেরকে আমি বাধা দিয়েছি। পরে গাড়ি অন্য দিকে নিয়ে গেছে।
ফল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দুলাল বলেন,এবার রোজার শুরুতে তরমুজের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় ভোক্তারা মুখ ফিরিয়ে নেন। ফলে বাজারে ধস নামে, এখন মূল্য প্রায় তিনগুণ কমে যাওয়ায় ভোক্তারা লাভবান হলেও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বর্তমানে পাইকারদের কাছে লাখ লাখ টন তরমুজ মৌজুদ রয়েছে,তা নিয়ে তারা বিপদে আছে। তরমুজ পচরেন হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এখন ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা পিকাপ ও ভ্যান গাি তে করে তরমুজ নিয়ে পাড়া-মহল্লায় ও হাট বাজারে ছড়িয়ে পরেছে, যে দামে বিক্রি করা যায় সে দামেই বিক্রি করে এখন টাকা উঠানোর চেষ্টা চলছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন