ময়মনসিংহ নগরীতে তুচ্ছ ঘটনার জেরে ছুরিকাঘাতে হাসান (২৪) নামে এক যুবক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শনিবার (২৫ মে) দুপুর পৌনে ৩টা থেকে বিকাল ৪টার পর্যন্ত নগরীর পাটগুদাম বিহারি ক্যাম্প ও ব্রিজ মোড় সংলগ্ন সড়কে এ বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিক্ষুব্ধরা।
এর আগে শুক্রবার (২৪ মে) রাত ৯টার দিকে নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড় বিহারি ক্যাম্প এলাকার হাজি কাশেম আলী কালেজের পাশে ছুরিকাঘাতে খুন হন তালা-চাবি তৈরির কারিগর হাসান।
নিহত হাসান নগরীর পাটগুদাম বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দা প্রয়াত মাসুদ মিয়ার ছেলে। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। নগরীর স্টেশন রোড এলাকায় তিনি তালা-চাবির কারিগর হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
হাসানের বড় ভাই মুরাদ বলেন, ‘আমার ভাইকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘গত রাত ৯টার দিকে বিহারি ক্যাম্প সংলগ্ন হাজী কাশেম আলী কলেজের পাশে বসে ছিল নিহত হাসান ও তার বন্ধুরা। এ সময় হঠাৎ স্থানীয় রাকিবের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর উপর্যুপরি হামলা করে। এতে হাসান, তার বন্ধু রুহিত আহমেদ ও রাজা মারাত্মক আহত হন। এ সময় স্থানীয়রা আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত রুহিত ও রাজাকে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।’
এ দিকে শনিবার (২৫ মে) বিকেলে নিহত হাসানের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বাসায় নিয়ে আসলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এলাকাবাসী। এ সময় তারা পাটগুদাম বিহারি ক্যাম্প, ব্রিজ মোড় সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি জানান। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে কোতোয়ালি মডেল থানা ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে খুনিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ কর্মসূচি থেকে সরে যায় এলাকাবাসী।
এ ঘটনায় বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে জানিয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাঈন উদ্দিন আরও বলেন, ‘বর্তমানে ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।’
অপরদিকে লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযান ইতোমধ্যে মূলহোতা রাকিব হাসান (২০) এবং সহযোগী হান্নানকে (২০) আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূলহোতা দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সেলুনে চুল কাটা নিয়ে তুচ্ছ বিষয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’