২০২৩ সালের ২৯ জুলাই সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে কেন্দ্রীয় বিএনপি কর্তৃক ঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের ছররা গুলিতে আহত নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটুর গুলিবিদ্ধ চোখের ৬ষ্ঠ অস্ত্রোপচার ঢাকার একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। ফতুল্লা থানা ছাত্রদল নেতা পিয়াস খন্দকার এক লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে শহীদুল ইসলাম টিটুর সুস্থতা কামনা করে বলেন, আমি দল - মত নির্বিশেষে শহীদুল ইসলাম টিটু ভাইয়ের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই, টিটু ভাইয়ের চোখের আলোতে এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা নতুন করে আলোকিত হবে, তাই আল্লাহ তায়া’লা যেন তার চোখের আলো ফিরিয়ে দিয়ে তাকে দ্রুত সুস্থতা দান করেন।
কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক পিয়াস খন্দকার বলেন, আমরা বেলা আনুমানিক ১১.৩০ মিনিটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিটাগাং রোড ডাচ্ বাংলা ব্যাংক সংলগ্ন এলাকায় জড়ো হয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিতে গেলে ডিবি ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ আমাদের বাঁধা দিয়ে লাঠিচার্জ ও গুলি করে। পুলিশের ছোঁড়া শর্টগানের ছররা গুলি আমার সামনেই থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু ভাইয়ের দুই চোখে সহ চেহারা ও শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়। দুই চোখেই প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। গুলি লাগার পর থেকেই তিনি বাম চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছিলো না। শরীরের আরও অন্তত ৮টি স্থানে গুলি লাগে। সেদিন আমাদের ছাত্রদল-যুবদলের অন্তত ১০-১২ জন রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় সম্পুর্ণভাবে তৎকালীন প্রশাসন ও পুলিশকে দায়ী করে এই ছাত্রনেতা আরো বলেন, সেদিনের কথা মনে পড়লে গা শিউরে উঠে, জেলা বিএনপির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক কেউই সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না, থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু ভাইয়ের সাহসী নেতৃত্বেই সেদিন জেলা বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হয়ে গন অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে, টিটু ভাই আর আমার মধ্যে খানে সর্বোচ্চ ৫/৭ মিটার দুরত্ব ছিলো, ব্যাংকের পিছনে খালের উপরে নির্মাণাধীন ব্রীজটা আমরা লোহার ইস্পাতের উপর দিয়ে খাল পার হয়ে সেদিন রাস্তায় উঠতে গেলেই পুলিশ গুলি ছুঁড়ে, বৃষ্টির মত গুলি এসে পড়ছিলো, সাউন্ড গ্রেনেডে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল হিরাঝিল, চিটাগাং রোড, মাদানী নগর সহ আশেপাশের এলাকাগুলো। সেই গুলিতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদুল ইসলাম টিটু ভাই এখন প্রায় অন্ধ হওয়ার পথে। চোখের চেয়ে মূল্যবান সম্পদ তো আর কিছুই নেই, সেদিন গুলি করার মতো পরিস্থিতিই সেখানে তৈরিই হয়নি। ঘটনার দিন আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, পুলিশ অতি উৎসাহী হয়েই আমাদের উপর গুলি করেছে।
পিয়াস বলেন, ফতুল্লা থানা বিএনপিকে চিরতরে ধ্বংস করে দিতে পরিকল্পিত ভাবেই এই হামলা হয়েছিলো, আমরা এই কাপুরুষোচিত হামলার আন্তর্জাতিক তদন্ত চেয়েছিলাম, বিবিসি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে রিপোর্ট করলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এই জঘন্যতম ঘটনার তদন্তপূর্বক বিচার এখন সময়ের দাবী। ইনশাআল্লাহ, টিটু ভাই সুস্থ হলেই মেডিকেল রিপোর্ট, আইনজীবীদের সাথে আলোচনা করে সবকিছু মিলিয়ে দলীয় নির্দেশনা পেলেই আমরা কোর্টে যাবো।