জার্মান আওয়ামী লীগ নেতা বাদলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে জনমনে ক্ষোভ

 


টঙ্গী প্রতিনিধিঃ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে খুনি হাসিনা ও তার সহযোগীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও, এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে জার্মান আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ বাদল আহমেদ, যিনি 'জার্মান বাদল' নামে অধিক পরিচিত। উত্তরা, টঙ্গী ও গুলশান এলাকায় এখনো প্রকাশ্যে বিচরণ করছে এই বিতর্কিত ব্যক্তি।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে জুলাই-২৪–এর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বাদলের বিরুদ্ধে ছাত্রদের ওপর লাঠিচার্জ ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, তিনি নিজে উপস্থিত থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের ওপর ভাড়াটে গুণ্ডা দিয়ে হামলা চালান। এছাড়া, উত্তরায় আন্দোলন দমন করতে নানাভাবে অর্থ ব্যয় করেন বলেও অভিযোগ উঠে।

শেখ বাদলের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানা এবং মোহাম্মদপুর থানায় একাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে। তিনি একসময় হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন এবং বর্তমান জার্মান আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্বে আছেন। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনের সময় নৌকার প্রতীক ব্যবহার করে প্রচারণা চালান, যদিও জার্মান পাসপোর্টধারী হওয়ার কারণে তিনি মনোনয়ন পাননি।

বাদল শেখের বিরুদ্ধে রয়েছে বিপুল অর্থপাচার, হুন্ডি ব্যবসা, মাদক ও অবৈধ মদের ব্যবসার অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, তিনি গোপনে শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন এবং দেশে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টর, হাতিরঝিল ও নিজ জেলা গোপালগঞ্জে তার নামে এবং বেনামে রয়েছে একাধিক বহুতল ভবন ও জমি, যার বাজার মূল্য হাজার কোটি টাকারও বেশি।

২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর তার উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের বাড়িতে যৌথবাহিনী ও উত্তরা পশ্চিম থানা অভিযান চালায়। যদিও সে সময় বাদল পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়, তবে তার সহযোগীদের বিদেশি ডলার ও অবৈধ মদসহ আটক করা হয়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শেখ বাদল ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অর্থ জোগানদাতা ছিলেন এবং সেই প্রভাব কাজে লাগিয়ে তিনি দীর্ঘদিন প্রশাসনকে ব্যবহার করে নিজের অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন। তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়ায় সাধারণ মানুষ ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জার্মান বাদল শেখের অবৈধ সম্পদের তদন্ত ও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন