রাজশাহীতে নার্সিং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এবার প্রকাশ্যে কর্মসূচিতে নেমেছেন শিক্ষকরা। মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে রাজশাহী নার্সিং কলেজের (সরকারি) শিক্ষকরা কলেজ চত্বরে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
‘বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী নার্সিং কলেজ’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
‘সারা দেশের সরকারি নার্সিং কলেজগুলোতে বেসিক বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য, শিক্ষকদের প্রতি অশালীন আচরণ, কুরুচিপূর্ণ, মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য প্রদান করে শিক্ষকদের অপমান করায় বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন করে প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি' প্রদান কর্মসূচি বলে ব্যানারে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নার্সিং উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ড. শরিফুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী নার্সিং ও মিডওয়াইফারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও নার্সিং কলেজের প্রভাষক আখতারা বেগম। অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য দেন- রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মতিয়ারা খাতুন, অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও কলেজটির প্রভাষক মনিরুল হাসান, প্রভাষক ঝর্না খানম প্রমুখ।
এ সময় বক্তব্য প্রদানকালে শিক্ষকরা বলেন, ‘গত ১২ মে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জারি করা নতুন আদেশে ডিপ্লোমা নার্সদের শিক্ষক হওয়ার সুযোগ বাতিল করা হয়েছে, যা বৈষম্যমূলক। আমরা ডিপ্লোমা, এপিএস, বিএসসি, মাস্টার্স, পিএইচডি করছি, তবুও আমাদের অযোগ্য বলা হচ্ছে। আমরা চাই সরকারের পক্ষ থেকে ন্যায্য সম্মান ও স্বীকৃতি।’ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সমাবেশে শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষার্থীরা আলোচনা চলাকালে হঠাৎ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং শিক্ষকদের রুমে তালা মেরে দেয়।
এর আগে, গত ১৩ মে রাজশাহী নার্সিং কলেজে বিএসসি এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থী ও হাসপাতালের স্টাফ নার্সদের সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় গত ১৪ মে কলেজ বন্ধের নোটিশ দেন কলেজ অধ্যক্ষ মতিয়ারা খাতুন। এর পরদিন ১৫ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ওই ঘটনায় বেসিক বিএসসি কোর্সের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, হাসপাতালের স্টাফ নার্সরা আমাদের ওপর অন্যায়ভাবে হামলা করেছে।
আর ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী ও হাসপাতালের স্টাফ নার্সদের অভিযোগ, বিএসসি শিক্ষার্থীরা হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিও হয়। এরপর সোমবার (১৯ মে) শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের তরফ থেকে একটি বিবৃতি আসে। সবশেষ মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে বিএসসি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কর্মসূচিতেই নেমে পড়লেন সরকারি নার্সিং কলেজের শিক্ষকরা।