কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে দ্বিতীয় বিয়ের ফুলশয্যার রাতে মারা গেছেন খালেকুজ্জামান ডিউট (৫৪) নামের এক বর। স্বামীর মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নববধূ লাভলী আক্তার (২০)। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শুক্রবার (২ মে) বিকেলে জানাজা শেষে খালেকুজ্জামাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। খালেকুজ্জামান ডিউট পেশায় একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিলেন। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে ছিল।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কবিরমামুদ গ্রামের শাহ জামালের মেয়ে লাভলী আক্তারের (২০) সঙ্গে একই উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে খালেকুজ্জামান ডিউট (৫৪) এর বিয়ে সম্পন্ন হয়। বৃহস্পতিবার বিয়ের অনুষ্ঠানে সারাদিন দু’পরিবারের আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে আপ্যায়নসহ নানান আনন্দ ও উৎসব চলছিল।
বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে নববধূ লাভলী আক্তার (২০) মেহেদী মাখা হাত, পড়নে লাল শাড়ি, বাসর (ফুলশয্যা) রাতে বিছানায় বসে বরের জন্য অপেক্ষা করছিল। রব খালেকুজ্জামান ডিউট (৫৪) বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কথা শেষে রাত ১২ টার দিকে বাসর ঘরে প্রবেশ করে নববধূর কাছে এক গ্লাস পানি চান এবং পানি চাওয়া মুহূর্তে চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরে নববধূর আত্মচিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে বর ডিউটকে মৃত অবস্থায় পায়। পরে বাড়ির লোকজন নিশ্চিত হন হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে।
নববধূর চাচা সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলম বলেন, খালেকুজ্জামান ডিউট প্রায় ১৮ বছর আগে প্রথম বিয়ে করেন। তার আগের স্ত্রীর নাম জান্নাতি আক্তার মুক্তা।
তার ঘরে এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ায় বৃহস্পতিবার আমার ভাতিজির সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। কে জানতো বিয়ের রাতেই আমার জামাইয়ের মৃত্যু হবে। অল্প বয়সে আমার ভাতিজি বিধবা হলো। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। সবই নিয়তির খেলা।
শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম মিয়া শোহেল জানান, নিয়তির ওপর তো কারও হাত নেই। তবে এ ধরনের হৃদয়বিদারক ঘটনা খুবই কম দেখা যায়। বাসর রাতেই স্ত্রী বিধবা! খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা। শুক্রবার বিকেল ৩টায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।