আব্দুল জলিল, সাতক্ষীরা : চলতি মৌমুসে সাতক্ষীরায় আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। গতকাল থেকে শুরু হয়েছে আম ভাঙ্গা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে আম যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। বিদেশে রপ্তানি হবে সাতক্ষীরার আম। মৌসুমে শুরুতেই চাষীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আম বাজারজাত করণে। ইতোমধ্যে বাজারে উঠেছে গোবিন্দভোগ, গোলাপখাস। এছাড়া রযেছে হিমসাগর,ল্যাংড়া, আম্রপালি, বোম্বাই, ক্ষিরসরাইসহ নানা জাতের আম। গাছ থেকে আম ভাঙা,প্যাকেট জাতকরণ, ট্রাকবোঝাই থেকে শুরু করে নানামুখী কর্মজজ্ঞে মেতে উঠেছে শত শত মৌসুমী শ্রমিক। এতে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ অর্থনীতি। একই সাথে প্রস্তুতি চলছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানির।
গতকাল সোমবার সাতক্ষীরায় আনুষ্ঠানিকভাবে গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগসহ স্থানীয় জাতের আমভাঙ্গা শুরু হয়েছে।সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ী ইউনিয়নের আম বাগান থেকে ভাঙ্গার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা প্লাবনী সরকার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রণয়ন সরকারসহ জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ২০ মে হিমসাগর, ২৭ মে ল্যাংড়া ও ৫ জুনে আম্রপালি জাতের আম সংগ্রহের নির্দেশনা দিয়েছেন ।
প্রথম ধাপে বাজারে এসেছে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বোম্বাই ও গোলাপখাসসহ স্থানীয় জাতের আম।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর সাতক্ষীরায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ হাজার মেট্রিক টন। এ বছর ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে ১৩ হাজার ১০০ জন চাষি আম চাষ করেছেন।
উপজেলা গুলোতে সকাল থেকেই পাইকাররা আম সংগ্রহ শুরু করেছেন। বাজারে চাহিদা ও দাম—দুটোই ভালো বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘সাতক্ষীরার আমই দেশের বাজারে সবচেয়ে আগে পাকে। সে কারণে এর চাহিদাও সবচেয়ে বেশি। এ জেলার আমের স্বাদ অতুলনীয়।’
এ বছর প্রায় ৪০০ কোটি টাকার আম বিক্রি ও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কোনোভাবেই যেন কেমিক্যাল বা ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার করে আম পাকানো না হয়, সে বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন।
ইতিমধ্যে আমি ক্ষতিকর কেমিক্যাল মিশানোর কারণে ব্যবসায়ীদের জব্দ করে জরিমানা করা হয়েছে। আবার নষ্ট করা হয়েছে কেবিকাল মিশানো আম।
কৃষি বিভাগ জানায়, ২০১৬ সাল থেকে সাতক্ষীরার আম বিদেশে রপ্তানি হয়। ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে হিমসাগর ও আম্রপালি জাতের আমের চাহিদা রয়েছে।