ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ভূঞাপুর ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুস সোবহান তারই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক দ্বারা শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে অপমান সইতে না পেরে না ফেরার দেশে চলে গেলেন।
গত শনিবার (২১ জুন) ভোর ৫ টায় দীর্ঘ প্রায় ১০/১২ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নিহত আব্দুস সোবহান ভূঞাপুর ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান। গত শনিবার বাদ মাগরিব উপজেলার গোবিন্দাসী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে গোবিন্দাসী কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে, তার মৃত্যুতে উপজেলাজুড়ে নানা মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গুঞ্জন উঠেছে তাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা করা হয়েছে। গত ২৫ এপ্রিল জামিনে মুক্তি পেয়েই তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরে চলতি মাসের ৯ জুন হঠাৎ গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবার।
উল্লেখ্য গত ১৭ এপ্রিল ভূঞাপুর ফাযিল মাদরাসায় দাখিল গণিত পরীক্ষার দিন কেন্দ্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে প্রশ্নপত্র কম থাকার অভিযোগে সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল ইসলাম অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহানকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং তাকে হুমকি দেন যে বয়স বিবেচনা না করেই ‘পিঠের চামড়া তুলে’ দেবেন।
এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ২০ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন অধ্যক্ষের ছেলে আব্দুল ওয়ারেছ। পরবর্তীতে সহকারী কমিশনার তারিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
শুধু তাই নয়, নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দিয়ে মব সৃষ্টি করা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে। এতে ওই অধ্যক্ষকে নিজ কক্ষে অবরোধ করে রাখা হয়। এতে ভিডিও করায় সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া হয়।
এর আগে ১৬ মার্চ জমিয়াতুল মোদারেছিন সংগঠন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সংগঠনের সভাপতি আফছার উদ্দিনকে কেন্দ্র সচিব হিসেবে মনোনয়নের জন্য মাদরাসা বোর্ডে সুপারিশ করে। তবে ২৪ মার্চ অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহান এই মনোনয়নের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন এবং ৮ এপ্রিল পুনরায় কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে বহাল হন।
তার এমন মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহকারি কমিশনারকে সমালোচনা করে বিভিন্ন পোস্ট করছেন।
Tags
টাঙ্গাইল