বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক, কলেজছাত্রীকে মারধর করে বিতাড়নের চেষ্টা

প্রতীকী ছবি

হাফেজ নজরুল, মুরাদনগর (কুমিল্লা) :
কুমিল্লার মুরাদনগরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পর ফয়সাল আহমদ ফাহিম নামের এক লম্পট লাপাত্তা হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রী ফাহিমের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ছয় দিন যাবৎ অবস্থান করছেন। তবে ফাহিমের স্বজনরা তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, থানা পুলিশের যোগসাজসে মেয়েটি ও তার পরিবারকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে একটি চক্র ষড়যন্ত্র করছে বলে জানা গেছে।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের সাতমোড়া গ্রামের পাখি আক্তারের মেয়ে অন্তরা আক্তার কম্পিউটার শিখতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস ৩ মাস মেয়াদী বল্লভদী গ্রামে স্থাপিত এডুফাস্ট কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে  ভর্তি হন। ওই ট্রেনিং সেন্টারে  ওস্তাদ ও একই এলাকার পল্লী চিকিৎসক ফারুক সরকারের ছেলে  ফয়সাল আহমদ ফাহিমের সাথে সখ্যতা গড়ে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে আসছিল। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটির সঙ্গে তিনি বিভিন্ন স্থানে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। বার বার বিয়ের দাবি করলেও লম্পট ফাহিম আজ নয়, কাল বলে কালক্ষেপন করতে থাকে। এ নিয় ওই সেন্টারে একাধিকবার শালিসি বসে মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ দিলে ফাহিম গা ঢাকা দেন। খোজ না পেয়ে ওই কলেজছাত্রী গত শনিবার থেকে ছয় দিন ধরে  ফাহিমের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেন।  ফাহিমের পরিবারর সদস্যরা তাকে মেনে নিতে রাজি নন। অভিযোগ রয়েছে, ফাহিমের স্বজনরা বুধবার মেয়েটিকে ব্যাপক মারধর করে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছেন। ব্যর্থ হয়ে অভিযুক্ত ফাহিমের স্বজনরা বিভিন্ন নাটক সাজিয়ে ভিডিও করারও অভিযোগ ওঠেছে। 
ভুক্তভোগী অন্তরা আক্তার ও তার পরিবারের অভিযোগ করছেন, ফাহিমের স্বজনেরা থানা পুলিশের যোগসাজসে একটি মব তৈরি করে মেয়েটি ও তার পরিবারকে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন। তারা মেয়েটিকে সামাজিকভাব হ্যায় প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানোর ষড়যন্ত্র ও চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির এডভোকেট সৈয়দ তানভীর আহমদ ফয়সাল স্থানীয় জনগণ এবং সুশীল সমাজের পক্ষে থেকে এ বিষয় দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন , একজন তরুণীর জীবন এভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। অভিযুক্ত ফাহিম এবং তার পরিবারকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।
এ বিষয় কথা বলার জন্য অভিযুক্ত ফয়সাল আহমদ ফাহিমর সাথ সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইলে ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
জাহাপুর ইউপির সাবেক সদস্য আলী নওয়াজ বলেন, মেয়েটি ধর্নাঢ্য পরিবারের এবং সুন্দরীও বটে। অনেক ভালো বিয়ে আসছে, মেয়েটি অন্যত্র বিয়ে করতে রাজি নয়। মেয়েটি কি কারনে বখাটে এ ছেলের জন্য পাগল তা বুঝত পারছিনা। 
জাহাপুর ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী সৈকত আহমেদ বলেন, ঘটনাটি শুনেছি আমি দুইজন মেম্বার কে ওই বাড়িতে পাঠাইয়া। সুরাহার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই ঘটনাটি ইউএনও সাহেবকে জানিয়ছি। তবে ছেলের স্বজনরা মেয়েটিকে মারধরর বিষয়টি দুঃখজনক। শুনেছি মব সৃষ্টি করে মেয়েটি ও তার পরিবারকে ফাঁসানোর চেষ্টা  চালাচ্ছে। 
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জানান, এ  বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা, সে বিষয় আমার কিছুই বলার নেই।
মুরাদনগর উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুর রহমান বলেন, বিষয়টি গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সামাজিকভাবে  নিষ্পত্তি করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন