দেলোয়ার হোসেন, পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) : বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবরদান। প্রবারণা পূর্ণিমার পর পাঁচবিবি উপজেলার বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে অনুষ্ঠিত হয়েছে কঠিন চীবর দান উৎসব।
৯ই অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আটাপুর ইউনিয়নের ঐতিহাসিক উচাই পাথরঘাটা বৌদ্ধ বিহারে অষ্ট পরিস্কারসহ সংঘদান, শিবলী পূজা, উপগুপ্ত পূজা, পঞ্চশীল প্রার্থনা ও ভিক্ষুদের জীবন প্রদানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কঠিন চীবরদান উৎসব পালন করে ঐ এলাকার বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। সবার মাঝে বিরাজ করছিল যেন উৎসবের আমেজ।
তুলা থেকে সুতা তৈরি,সে সূতায় চীবর তৈরীর কাজটি ২৪ ঘন্টার মধ্যে সম্পাদন করে তা দান করতে হয়। তাই একে কঠিন চীবর দান বলা হয়। বিহার স্হলে সত্য বোধিবৃক্ষে ২৮ বুদ্ধের সয়ংসম্পন্ন শেষে আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর জেলার নবাবগন্জের ছাতনী আনন্দ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সমানন্দ মহাথেরো।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ও বিভিন্ন ধর্মালম্বীদের সামগ্রী প্রদান করেন,জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক আফরোজা আক্তার চৌধুরী।
আরো বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমনা রিয়াজ, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট আয়শা সিদ্দিকা ও আটাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আসম সামছুল আরেফিন চৌধুরী আবু । স্বাগত বক্তব্য রাখেন, পাথরঘাটা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সুশীল প্রিয় ভিক্ষু । তিনি বলেন, এ ৭০ তম দানিও উৎসবে প্রায় ৪ শত বিভিন্ন ধর্মালম্বী নারী পুরুষ ও শিশুদের মাঝে উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
স্ব-ধর্ম আলোচনা করেন,নওগাঁ বদলগাছি জ্ঞানরত্ন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ সংঘরাজের সদস্য ধর্মানন্দ ভিক্ষু, ভয়াল বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ করুনা ভদ্র,পীরপাল বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সংঘরত্ন থেরো, উপজেলা কঠিন চীবর দান উৎসব কমিটির সভাপতি দিলীপ মালো ও সেক্রেটারি মৃগাঙ্গ সরকার প্রমুখ। পরে অনুষ্ঠানে দায়ক দায়িকারা ভান্তেকে চীবর দান করেন । শেষে বিকেলে মনোজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচ ও গান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পবৃন্দরা। উল্লেখ্য,যথাযোগ্য মর্যাদায় উপজেলার ১০টি বৌদ্ধ বিহারের এ উৎসব পালন করছে প্রায় ৬ হাজার বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা।