মো: লুৎফর রহমান (খাজা শাহ্) : কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ, ভাসানীর আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশের মানুষের আওয়ামী লীগ ও ভোটারদের আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলকে যদি ভোটের বাইরে রাখা হয়, তাহলে আমি গামছা নিয়ে নির্বাচনে যাবো না। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, জয় বাংলা বলে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। বঙ্গবন্ধু আমার ধ্যান-জ্ঞান, আমার চৈতন্য।’
গত সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকালে টাঙ্গাইলের সখীপুরের বহেড়াতৈল ইউনিয়নে বহেড়াতৈল হাই স্কুল মাঠে দলের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা ১৬ বছর মানুষকে অত্যাচার-জলুম করেছে এবং অসম্মান করেছে উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘কম অত্যাচারে মানুষ তাকে তাড়ায়নি। তার সময়ে নৌকাওয়ালারা যত চান্দা তুলেছে, গত ১৪ মাসে তার ১০ গুণ অন্য দলের নেতারা চান্দা তুলেছে। শেখ হাসিনা মানুষকে কম নির্যাতন করেনি। এই ৮-১০টা বাচ্চা ছেলে তার পতন ঘটাতে পারেনি, বিএনপি পারেনি, জামায়াতও পারেনি। কিন্তু তার পতন হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, তার পতন আল্লাহর তরফ থেকে হয়েছে। শেখ হাসিনা মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। তেমনি এই সরকারও আমাদের ভোট দিতে দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার যখন পতন হয়, তখন মানুষের মনে এক নম্বরে ছিল ধানের শীষ। এখন ধানের শীষ হয়েছে মানুষের পেটের বিষ। যে কারণে মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে শেখ হাসিনাকে সরিয়েছে, সেই একই কাজ করলে বিএনপিকেও ভুলে যেতে মানুষের সময় লাগবে না।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম আরও বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী আজ অনেক লাফালাফি করছে। আমি আল্লাহকে হাজির-নাজির করে বলছি, তারা এককভাবে ইলেকশন করলে পাঁচটির বেশি আসন পাবে না। মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত যে অপরাধ করেছে, সত্যিকার অর্থে মাফ না চাইলে তারা কখনও দেশের শাসন ক্ষমতায় যেতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দাবি আদায়ের জন্য, অধিকার আদায়ের জন্য কখনও কখনও যুদ্ধ করতে হয়। তার মানে এই নয় যে বিশৃঙ্খলা করতে হবে। আমি যুদ্ধ পছন্দ করি, কিন্তু বিশৃঙ্খলা পছন্দ করি না। দেশে এখন বিশৃঙ্খলা চলছে। কতজনের কত বাড়ীঘর ভাঙলো, অবশেষে শুনছি রাষ্ট্রের সরকারের সর্বোচ্চ যে প্রধান তার বাড়িতেও নাকি আক্রমণ হয়। যে লোক নিজেকে রক্ষা করতে পারে না, বাড়িঘর রক্ষা করতে পারে না, তিনি কীভাবে ১৮ কোটি মানুষকে নিরাপত্তা দেবেন।’
‘আমি শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ করি না। আমি বঙ্গবন্ধু করি, আমি মুক্তিযুদ্ধ করি, আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাই। আমি জয় বাংলা করি। সরকার বাহাদুরকে বলে গেলাম, জয় বাংলা বলা যদি অপরাধ হয়, তাহলে আমাকে প্রথম গ্রেপ্তার করেন। সেখানেও আমি বলব, আমি জয় বাংলা বলে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, জয় বাংলা বলেই আমার জীবন দিয়ে যেতে চাই।’
ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘শেখ হাসিনা যখন আপনাকে সুদখোর বলেছিল, আমি তখন আপনার গ্রামীণ ব্যাংকের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। আমি পাশে না দাঁড়ালে গ্রামীণ ব্যাংক মাটির সঙ্গে মিশে যেতো। ভবিষ্যতেও শুধু গ্রামীণ ব্যাংক নয়, গ্রামীণ নামে যা কিছু আছে, তারও বিপদ আছে।’
