আব্দুল আলিম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি : ৪৬ নওগাঁ-১ (সাপাহার–পোরশা–নিয়ামতপুর) আসনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে সৎ ও দায়িত্বশীল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে মাঠে নেমেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম। সম্প্রীতি তাঁর শেয়ার করা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট গুলোতে এবং তাঁর সংসদীয় আসনে বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণামূলক বক্তব্যে উঠে এসেছে ন্যায়, সততা, মানবিকতা ও সেবা-নির্ভর রাজনীতির একটি স্পষ্ট দর্শন।
“দেশটা নয়, সিস্টেমটাই পচে গেছে” — পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি
সম্প্রীতি 'অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম' নামে একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “দেশটা পচে যায়নি, পচে গেছে কিছু অসৎ মানুষ… যারা দায়িত্ব পেয়ে দায়িত্ব ভুলে গেছে। আমাদের দেশে এখনো সৎ মানুষ আছে, পরিশ্রমী কৃষক আছে, ন্যায়প্রিয় শিক্ষক আছে — যা নেই, তা হলো সৎ নেতৃত্ব, স্বচ্ছ প্রশাসন, আর জবাবদিহিমূলক শাসনব্যবস্থা।”
এই বার্তায় তিনি দুর্নীতি, দালালতন্ত্র ও ঘুষ-নির্ভর প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, জনগণ যদি সৎ মানুষকে বেছে নিতে পারে, তবে “দালাল ছাড়াই ভূমি অফিসে কাজ হবে, থানায় গেলে সম্মান পাওয়া যাবে, আর ইউএনও অফিসে মানুষ মর্যাদা ফিরে পাবে।”
তাঁর এই আহ্বান স্থানীয় মানুষের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে—বিশেষ করে তরুণ ও শিক্ষিত মহলে।
আরেক টি পোস্টে তিনি শিক্ষক সমাজ কে জাতির “বিবেক ও আলোর পথপ্রদর্শক” হিসেবে বর্ণনা করেন। “শিক্ষক সমাজই পারে জাতিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে মুক্ত ও মূল্যবোধনির্ভর করতে, এবং তরুণ প্রজন্মকে নৈতিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে,”
— উল্লেখ করেছেন অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম।
তিনি নওগাঁ-১ আসনের প্রতিটি বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষককে নিজের “সহযোদ্ধা ও অনুপ্রেরণা” হিসেবে বর্ণনা করেন এবং শিক্ষা-নির্ভর মানবিক রাজনীতির অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলমের প্রচারণায় নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদার বিষয়ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে। “প্রতিটি নারী নিরাপদ থাকুক ঘরে ও বাইরে, প্রতিটি মা পান মাতৃত্বকালীন সহায়তা, প্রতিটি মেয়ে পান শিক্ষার সমান সুযোগ, আর প্রতিটি নারী হোক মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত।”
তিনি মনে করেন, রাজনীতিতে নৈতিকতা ফিরিয়ে আনতে হলে মা-বোনদের অধিকার ও সম্মান সুরক্ষিত করাই প্রথম শর্ত।
মাঠে নেমে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি লেখেন, “তারা রাজনীতি বোঝে না, তারা বোঝে কে তাদের কষ্টের কথা ভাবে। আমি রাজনীতিকে ক্ষমতার সিঁড়ি হিসেবে দেখি না, দেখি মানুষের সেবা করার সুযোগ হিসেবে।”
এই বক্তব্যে তাঁর রাজনীতির মূল দর্শন স্পষ্ট — মানুষের জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা এবং ক্ষমতার পরিবর্তে সেবাকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, “এই কৃষকের হাত শক্ত হলে, বাংলাদেশ শক্ত হয়।”
সাম্প্রতিক এক প্রচারণায় নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এক প্রাণবন্ত বাইক মিছিলে অংশ নেন তিনি। তরুণদের উচ্ছ্বাসে মুখরিত ছিল মিছিলটি।
“এই মিছিল ক্ষমতার নয়, মানুষের মর্যাদা ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান,”
বলতে শোনা যায় তাঁকে।
তরুণদের উদ্দেশে তিনি আহ্বান জানান “দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে ইনসাফ, সততা ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে।”
ফেসবুক পেইজের প্রতিটি পোস্টে যে বার্তা প্রতিফলিত হয়েছে তা হলো, রাজনীতি কোনো ব্যক্তিগত উচ্চাভিলাষের বিষয় নয়; এটি মানুষের কল্যাণে দায়িত্ব পালন করার এক পবিত্র অঙ্গীকার।
অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলমের প্রচারণায় ধর্মীয় মূল্যবোধ, ন্যায়বিচার, নারী-পুরুষের সমঅধিকার এবং কৃষক-শিক্ষক-শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার বিষয়গুলো কেন্দ্রস্থলে রয়েছে।
নওগাঁ-১ আসনের রাজনীতিতে অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলমের আগমনকে অনেকেই “নৈতিক রাজনীতির পুনর্জাগরণ” হিসেবে দেখছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রশাসনিক জটিলতা, ঘুষ-দালাল-দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে সৎ নেতৃত্বের বার্তা আজ অনেক নাগরিকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলমের শিক্ষকতাজীবন ও মানবিক চিত্র স্থানীয় জনগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। তাঁর প্রচারণায় আবেগ ও বাস্তবতার মিশ্রণ—যা বর্তমান রাজনীতির ভাষায় বিরল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলমের পোস্টগুলো শুধু নির্বাচনী প্রচারণা নয়—এগুলো এক অর্থে রাজনীতির নৈতিক পুনর্বিবেচনা।
সৎ নেতৃত্ব, ন্যায়ের শাসন, মানবিক সমাজ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসনের স্বপ্ন তিনি যে ভাষায় তুলে ধরছেন, তা সাধারণ মানুষ, শিক্ষক, কৃষক ও তরুণদের মাঝে একটি আশার প্রতিচ্ছবি তৈরি করছে।
যেমন তিনি নিজেই বলেছেন “দেশটা নয়, সিস্টেমটাই পচে গেছে। আর এই সিস্টেমকে ঠিক করবে কেবল সৎ নেতৃত্ব।”
