নাগরপুর(টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সরকারী মাওলানা মোহম্মদ আলী কলেজের অনার্স (সম্মান) ৩য় বর্ষের ছাত্র জাহিদ খান ঝলক (২৪) কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার রাত সারে ৯টার দিকে উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের সলিমাবাদ মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই গ্রামের শামিনুর খানের ছেলে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ওই রাতেই ৩ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জিহাদ ও রানাকে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থেকে নাগরপুর থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল আলীম ও সালাহ্ উদ্দিনের নেতৃত্বে গ্রেফতার করা হয়। পরে ইমনকে সালিমাবাদের নিজ বাড়ি থেকে ইন্সেপেক্টর তদন্তের নেতৃত্বে গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, তারাবিহ নামাজ পড়ার জন্য জাহিদ খান ঝলক বাড়ির পাশের মসজিদে যায়। তারাবি নামাজ আংশিক পড়ে সে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় পথিমধ্যে পূর্বে থেকে ওৎ পেতে থাকা রানা, জিহাদ ও ইমনসহ আরো ১০/১২ জন মিলে তাকে উপুর্যপুরি কুপিয়ে ফেলে রাখে। নিহত ঝলকের ভাই পিয়াল হাসান পলক জানান, তারাবিহ নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হলে নারী ও শিশুদের চিৎকারের শব্দ শুনতে পাই। পরে ঘটনা স্থলে পৌছে দেখি আমার ভাই ঝলককে সন্ত্রসীরা কুপিয়ে সঙ্গাহীন অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে। এসময় প্রতিবেশী ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় ঘটনা স্থল থেকে ঝলককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ইসরাত জাহান ইমা বলেন, ছাত্রলীগ নেতা ঝলক হাসপালে পৌছানোর আগেই পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হয়।
নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) হাসান জাহিদ বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে । হত্যা মামলায় জিহাদ, ইমনকে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামী রানাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশি পাহাড়ায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আজিম হোসেন রতন এ হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, নিহত ঝলক উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সে অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমি ছাত্র নেতা ছিল। সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান।
এ ব্যাপারে নাগরপুর থানায় নিহতের পিতা শামিনুর খান বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত রেখে হত্যা মামলা রুজু করেন। হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ৩ জনকে আটক করে থানা পুলিশ। আটকৃতরা হল সলিমাবাদ গ্রামের রফিকুল ইসলামের দুই ছেলে রানা (২২), জিহাদ (১৯) ও একই গ্রামের জহের আলীর ছেলে ইমন (১৯)।