সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ ঘোলাদিঘী মসজিদের দ্বিতীয় তলার অবকাঠামো উন্নয়নে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মসজিদের অবকাঠামো উন্নয়নে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। বিষয়টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে মুসল্লিদের পক্ষ থেকে বার বার জানানো হলেও তারা কোনও তোয়াক্কা করছে না। আর এর মাধ্যমে মসজিদের দ্বিতল ভবনের স্থায়িত্ব ও মান নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে সচেতন সমাজ ও মুসল্লিরা অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানালে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে সরেজমিনে এসে অনিয়ম পাওয়ায় কাজ বন্ধ করে দেন উপজেলা এলজিইডির দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী খালেদুল ইসলাম।
জানা যায়, নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ঘোলাদিঘী গ্রামের ঘোলাদিঘী জামে মসজিদের দ্বিতীয় তলা উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের 'গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন' প্রকল্পের প্রায় ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি টেন্ডার পান নওগাঁর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান 'মেসার্স পূর্ণিমা এন্টারপ্রাইজ। কাজটি সম্পূন্ন করার জন্য পূর্ণিমা এন্টারপ্রাইজের কাছে থেকে সাব-টেন্ডার নিয়ে কাজ শুরু করেন নজিপুরের ঠিকাদার মোশারফ হোসেন। একাজে নিম্নমানের বালি দেওয়া এবং সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়া সহ অন্যান্য কাজের মান নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ করে স্থানীয়রা বলেন শিডিউল মেনে কাজ করা হচ্ছে না, মুসল্লিদের পক্ষ থেকে কাজের শিডিউল দেখতে চাইলে শিডিউল না দেখিয়েই ঠিকাদার বলছে শিডিউল মেনেই কাজ করা হচ্ছে। এ নিয়ে সচেতন সমাজ ও মুসল্লিরা অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার দাবি জানালে উপ-সহকারী প্রকৌশলী খালেদুল ইসলাম কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
ঘোলাদিঘী জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. ফারুক হোসেন বলেন, আমরা জেনেছি এই মসজিদের দ্বিতীয় তলার অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য অনেক টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন নিম্ন মানের বালি দিয়ে নাম মাত্র সিমেন্ট মিশিয়ে এবং শিডিউল না মেনেই কাজ করে আসছিলো। মসজিদের সচেতন মুসল্লিরা বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা এলজিইডি উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে জানালে তিনি এসে অনিয়ম পাওয়ায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
ঘোলাদিঘী জামে মসজিদের ইমাম জাইদুল ইসলাম বলেন, সকালে স্থানীয় মুসল্লিরা মসজিদ উন্নয়ন কাজ দেখতে গিয়ে কাজের মধ্যে অনেক অনিয়ম দেখতে পান। এসময় ঘোলাদিঘী গ্রামের স্থানীয় মুসল্লিরা উপজেলা এলজিইডি উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে জানালে তিনি এসে অনিয়ম পাওয়ায় কাজ বন্ধ করে দেন।
সাব-ঠিকাদার মোশারফ হোসেন বলেন, কাজ করতে গিয়ে মিস্ত্রীরা ভুল করতে পারে, মিস্ত্রীদের ভুলগুলো আমাদের জানালে আমরা অবশ্যই সেটির সমাধান করে কাজ করবো। ঠিকাদার মোশারফের কাছে কাজের শিডিউল দেখতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শিডিউল বা কাজের কোনো তথ্য দিতে পারবো না। শিডিউল বা কোনো তথ্য নিতে চাইলে উপজেলা এলজিইডি অফিস থেকে নিতে পারেন।
উপজেলা এলজিইডির দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী খালেদুল ইসলাম বলেন, ঘোলাদিঘী মসজিদের দ্বিতীয় তলার অবকাঠামো উন্নয়নের কাজে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে পেয়ে কাজ আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।