ভোলা প্রতিনিধি :
ভোলায় চলতি বছরে উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের ব্রীধান-১০৩ আবাদ সফলতার আশা চাষীদের। অন্যান্য জাতের আগেই এসব ধান ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করতে পারেন কৃষকরা। দ্বীপজেলা ভোলায় প্রথমবারের মতো কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার ও বালাইনাশক ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে ব্রীধান-১০৩ এর আবাদ করানো হয়েছে। এসব কৃষকদের ক্ষেতে এখন বাতাসে দুলছে সোনালী রঙ্গের ধান।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের পার্টনার প্রকল্পের আওতায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অর্ধশত কৃষককে দিয়ে উচ্চ ফলনশীল ব্রীধান-১০৩ আবাদ করিয়েছেন। কৃষকরা আগামী ১০ দিনের মধ্যে এসব ধান কর্তন শুরু করবেন।
এসব কৃষকরা এ বছর প্রথমবারের মতো চারশতাধীক একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের এ ধানের আবাদ করেছেন। এসব ধান বাজারে বীজ হিসেবে বিক্রি করা হবে। বাজারে এসব ধানের বীজ পাইকারি প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং খুচরা ৮০ থেকে ৯০ টাকা করে বিক্রি করতে পারবেন।
চাষী মোঃবাবুল, সেলিম এবং হারুন বলেন, জেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় চলতি আমনের মৌসুমে ২ একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল ব্রীধান-১০৩ চাষ করেছি।কৃষি অফিস থেকে আমাদেরকে বিনামূল্যে ধানের বীজ, সার, কীটনাশক ও বীজ সংরক্ষণের জন্য ড্রাম দেওয়া হয়েছে।
এই জমিতে ধানের চাষ করতে জমি চাষাবাদ, শ্রমিক ও বালাইনাশক এবং অন্যান্য খরচসহ প্রায় ৪০ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে আশা করছি এই ২একর জমি থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ধানের বীজ বিক্রি করতে পারবো। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের ভেতর ক্ষেতের ধান কাটা শুরু করবো ইনশাআল্লাহ।
চাষি মোঃ নান্নু, রফিজল এবং কাকলি রাণী জানান, আমরাও উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রীধান ২ একর জমিতে চাষ করেছি। তবে অতিবৃষ্টির কারণে আমাদের এলাকায় ধান আবাদ করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। তাই আমরা আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু করতে পারবো বলে আশা করছি। এসব ধান বাজারে বীজ হিসেবে বিক্রি করবো। যার মূল্য হতে পারে কমপক্ষে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ধান চাষ করতে এবং বীজ সংরক্ষনের জন্য কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে আমাদের ধানের বীজ,সার, কীটনাশক ও ড্রাম দেওয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, আমাদের দেশের জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। চাষাবাদের জমি কমতেছে, যে জমি আছে তার মধ্যে বেশী ফসল উৎপাদন করে জনগনের মুখে খাবার তুলে দিতে এখন থেকে আমাদের উচ্চ ফলনশীল জাতের ফসল আবাদ করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর আমনের মৌসুমে ব্রীধান-১০৩ জাত আবাদের জন্য জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বøকে কৃষককে বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক এবং বীজ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। প্রথমবার তারা এ ধান চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। এসব চাষিরা এই ধান থেকে বীজ সংরক্ষণ করবেন। যার মাধ্যমে আগামীতে এ জেলায় উচ্চ ফলনশীল জাতের এ ধানের আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে।
অন্যদিকে কৃষকরা যেন ফসল আবাদ করে ক্ষতির সম্মুখীন না হন। সে জন্য আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিটি এলাকায় গিয়ে কৃষকদের নিয়মিত খোঁজ-খবর নেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। আমাদের লক্ষ্য প্রত্যেক কৃষক যেন তাদের আবাদ করা ফসল থেকে ভালো ফলন পাওয়ার মাধ্যমে লাভবান হতে পারেন।