বিল্লাল হোসেন, যশোর
ইনসুলিন প্লান্ট। যার বৈজ্ঞানিক নাম কস্টাস ইগনেয়াস। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এই উদ্ভিদকে 'ডায়াবেটিস প্লান্ট' হিসেবেও আখ্যা দেয়া হয়েছে। যার পাতা চিবিয়ে খেলে মুহুর্তে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ চলে আসে। ঔষধি গুনসম্পন্ন ও গাছ ইনসুলিন প্লান্ট চাষ হচ্ছে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা গ্রামের মল্লিক পাড়ায়। প্রথমবারের মত গাছটি চাষ করেছেন সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য খন্দকার কবির হোসেন। তিনি ইনসুলিন প্লান্টের মত বড় দুর্লভ প্রজাতির ঔষধি গাছ করসল, ননীফল, লাল চন্দন, শ্বেতচন্দন, আগর, জাফরান, স্টেভিয়া, বীর্যমনি, শ্বেত মাকাল, কপূর ও তুরুকচন্ডালের বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন। ৩ বিঘা জমির ওপর শ’শ’ দুষ্প্রাপ্য গাছ চাষাবাদের মধ্যে তৈরি করেছেন ননীফল নার্সারি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা চারা গাছ এবং ঔষধি গাছের ফল কিনতে ননীফল নার্সারিতে ভিড় করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ননীফল নার্সারিতে রয়েছে ৫ শতাধিক ঔষধি গাছ। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইনসুলিন প্লান্ট, ননীফল, টক আতা, রোলিনি, রামবুটান, লাল কাঁঠাল, সাদা জাম, বিচিবিহীন জাম, মিসরীয় ডুমুর, ত্বিন, অ্যাভোকাডো, বারাব্বা, কোকাম, আখরোট, কেপাল, পি নাট বাটার আইসক্রিম, বিনরেড, সানথেলো, বারোমাসি আম(ভিয়েতনামি),হলুদ লংগান, আলফানসো আম, থাই কাটিমন(বারোমাসি)কোরিয়ান জিনসেং, মহি সবেদা, কামিনী কলম, কাটা বিহীন লেবু, স্ট্রবেরী পেয়ারা, ইন্ডিয়ান কামিনী, রোলিনী ফল, গ্যালরিয়া, রামবুটাম ফল, গোল মরিচ, ভেড়াকাটা পেয়ারা, হলুদ স্ট্রবেরী পেয়ারা, লাল স্ট্রবেরী পেয়ারা, লাল কাঠাল, ইন্ডিয়ান আম, লকেট ফল (কলম),পোলাচান ফল, ব্রেড ফল, পারসিমন ফল, চায়না ডালিম, লেটিনা ফুল,নাসপাতি ফল, লাল লেবু (জাম্বুরা),গন্ধরাজ লেবু, গোলাপী কাঁঠাল, বারোমাসি কাঁঠাল, আমলকি, আংগুর, মিশরী ডুমুর তৌন, আপেল, সিদুরী কাঁঠাল, শরীফা, কমলা, কদবেল কলম, লাল চেরী, বারমাসি আমড়া, রাম বুটাম, পেসতা বাদাম, চুমা আম, এভোকাড কলম, গোলাপ টব, গোলাপ, ভারতীয় চোষা আম, ননীফল, চেরী ফল কলম, বারমাসি বড় কাঁঠাল, বারমাসি ছোট কাঁঠাল, পিংক কাঁঠাল, মালাই আপেল, লবঙ্গ, জয়ফল, কাজু বাদাম, মানমোলো, পিনাক বাটার, আপেল পেয়ারা, ভারতীয় ডুমুর, আগর, জয়তী, শ্বেত চন্দন, রক্ত চন্দন, ফলমা, আলু বুখারা, চেরী ফল, কারীপাতা, লুকলুকী ফল, কামরাংগা ও ড্রাগন কাটিং।
খুলনার দৌলতপুর থেকে ইনসুলিন প্লান্ট গাছের পাতা নিতে আসেন সেলিম হোসেন। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, তার মা দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত। ননীফল খেয়ে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। এখন তার মার ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে। ওষুধ খেয়েও নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এজন্য ননীফল নার্সারিতে এসেছেন ইনসুলিন প্লান্ট গাছের পাতা নিতে।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আব্দুর রাজ্জাক জানান, তার পিতা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছেন। শুনেছি ইনসুলিন প্লান্টের পাতা চিবিয়ে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এজন্য ননীফল নার্সারিতে এই গাছের পাতা কিনতে চলে আসলাম।
যশোর শহরের বাসিন্দা মহাসিন আলী জানিয়েছেন,ইনসুলিন প্লান্ট গাছের পাতা খেয়ে তার মায়ের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার জানিয়েছেন, কয়েক শ’ দুর্লভ প্রজাতির ঔষধি গাছ চাষ করে রেকর্ড গড়েছেন ননীফল নার্সারির মালিক খন্দকার কবির হোসেন। তিনি নিজে ননীফল নার্সারি পরিদর্শন করেছেন। কবিরের মত ঔষধি গাছ চাষ করে অনেকেই সাফল্য অর্জন করতে পারেন।