বরগুনার আমতলীতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণীর সঙ্গে ১৬ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে কুয়েত প্রবাসী মহিউদ্দিন বিশ্বাসের। ওই তরুণীর অভিযোগ, পরিবার বেশ কয়েকবার বিয়ের উদ্যোগ নিলেও প্রবাসীর বাধায় তা হয়নি। এরই একপর্যায়ে শুক্রবার (২ মে) সকাল থেকে তিনি ফোনে জানিয়ে দেন, তাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। এমন কথায় রাত ৯টার দিকে তার বাড়িতে অনশনে বসেছেন ছাত্রী।
রোববার (৪ মে) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রী কুয়েত প্রবাসী মহিউদ্দিনের বাড়িতে অনশনে বসে আছেন। মহিউদ্দিনের বড় ভাই, ছোট ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। তবে ঘটনার পর থেকে প্রবাসী পলাতক আছেন।
এদিকে প্রবাসী মহিউদ্দিনের সঙ্গে ছাত্রীর বিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ প্রবাসীর বাড়িতে গিয়ে অনশনে বসা ছাত্রীর খোঁজখবর নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, মহিউদ্দিন বিশ্বাস মেয়েটির সঙ্গে প্রেম করেছেন, তা এলাকার সবাই জানে। এত বছর একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করে কেন তাকে বিয়ে করবে না?
এ বিষয়ে অনশনে বসা ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, আমার জীবন থেকে মহিউদ্দিন ১৬টি বছর নষ্ট করে দিয়েছে। আমার পরিবার বেশ কয়েকবার বিয়ের উদ্যোগ নিলেও মহিউদ্দিন ভেঙে দিয়েছে। এখন আবার মহিউদ্দিনের বড় ভাই আল-আমিন আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আত্মহত্যা করা ছাড়া এখন আমার আর কোনো পথ খোলা নেই।
এ বিষয়ে জানতে প্রবাসী মহিউদ্দিন বিশ্বাসের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে মামলার বিষয়ে মহিউদ্দিনের ভাই আল-আমিন বিশ্বাস বলেন, আমার ভাই মহিউদ্দিন বিশ্বাসের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ের কথাবার্তা চলছে। আমি কেন তার বিরুদ্ধে মামলা দেব?
স্থানীয়রা জানান, আমতলী পৌর শহরের এক ছাত্রীর সঙ্গে উপজেলার একটি গ্রামের মহিউদ্দিন বিশ্বাস ১৬ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তখন মহিউদ্দিন দশম শ্রেণিতে এবং ছাত্রী অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীর। তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ ক্লাসে অধ্যয়নরত রয়েছেন।
২০১৭ সালে মহিউদ্দিন কুয়েত চলে যান। এরপর থেকে কয়েকবার ছাত্রীর পরিবার তাকে বিয়ে দিতে উদ্যোগ নিলেও তার বাধায় বিয়ে পণ্ড হয়। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রীর বিয়ের প্রস্তাব এলেই ভেঙে দিতেন তিনি। ৮ বছর পর গত ৪ মার্চ তিনি কুয়েত থেকে বাড়িতে আসেন। এরপর দুজনের মধ্যে বেশ ভালো সম্পর্ক চলে আসছে। তাদের প্রেমের সম্পর্ক দুই পরিবারও জানে। কিন্তু এখন তাকে তিনি বিয়ে করতে রাজি নন।
এ বিষয়ে আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে অনশনে বসা তরুণীর খবর নেওয়া হয়েছে। মীমাংসার চেষ্টা চলছে। তবে মামলা গ্রহণের বিষয়ে এখন পর্যন্ত আদালতের কোনো নির্দেশের কপি পাইনি। আদালতের আদেশ পাওয়া মাত্র আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।