এ.বি.এম.হাবিব, নওগাঁ :
নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের সুতিহাটে ভাইয়ে ভাইয়ে দীর্ঘদিন থেকে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে দন্দ চলে আসছে বর্তমানে তা চরমে উঠেছে এবং পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার গোনেশপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত- আলহাজ্ব ইদ্রিস আলী প্রাং এর ৩ ছেলে, মো. রবিউল আলম সুজা মো.ওয়াহেদুল ইসলাম সাবু মো. সাজ্জাদ হোসেন। ২০০৭ সালে তাদের বাবা মারা গেলে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রথমে ছোট ছোট দন্দ শুরু হয়।
ছোট দুই ভাই অভিযোগ করে বলেন, এখানে কোন দন্দই হওয়ার কথা নয়। বাবা মারা গেছেন, সকল সম্পত্তি ৩টি ভাগ হবে। আর মায়ের অংশ আলাদা থাকবে। তারা বলেন, তাদের বড় ভাই সুজা তার ইচ্ছামত যেখানে সেখানে পৈতৃক জমি গুলো দখল করে নেয়। ছোট দু,ভাই সরকারি চাকরীর সুবাদে, এগুলোতে ঠিকমত নজর না দেওয়ায় একে একে বাড়ী-ভিটাসহ বহু জায়গা দখলে নিয়ে নিয়েছে। এ বিষয় নিয়ে স্থানীয় ভাবে বহুবার শালিশ হলেও কোন সুরাহা হয় না বা বড়ভাই সুজা তা মানতে অস্বীকার করে। তারা বলেন,বাংলাদেশে যখন যেই সরকার ক্ষমতায় থাকে,তখন সেই সরকারের লোক সেজে, তার ছোট দু,ভাইকে বিভিন্ন ভাবে কোণঠাসা করে রাখে এবং ২০১৯ সালে মায়ের মৃত্যুর পর, মায়ের সম্পত্তি ভাগাভাগির সময় স্থানীয় মাতবরদের উপস্থিতিতেই তার স্ত্রী,ছেলেসহ তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে মেজভাই সাবুকে মারধর করে। সে সময় আওয়ামী দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তার স্ত্রীকে দিয়ে থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। তাতেও সাবু বহু হয়রানি পেরেশানি হয়েছিল। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে সে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছিলো।
বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে ওয়াহেদুলের স্ত্রীর সাথে যোগ-সাজস করে মিথ্যা মামলা দিয়ে, প্রায় ১০ বছর চাকরী থেকে সাসপেনশানে রেখেছিল তাকে। এদিকে বাড়ী ভিটাতে গরু ছাগলের ঘর বানিয়ে ধিরে ধিরে তাদের বিভিন্ন জায়গা জমি দখল করে নেয়।
বর্তমানে অস্থায়ী সরকারের আমলে সুজা তার এক ছেলেকে সমন্নয়ক সাজিয়ে সেদিক থেকেও বিভিন্ন ভাবে মোবাইলে হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদেরকে কোণঠাসা করে রাখছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। গত (১১মে) রবিবারে সুতিহাট গ্রামীন ব্যাংকের মোড়ে বাবার কেনা জমি, যাহা ভাগ করার বহু আগেই সামনের পজিশনে তার বড় ভাই সুজা ঘর নির্মান করেছে। বাঁকী ছোট দু,ভাই ঘর নির্মান করলে যেকোন একটি ভাইয়ের যাওয়া-আসার রাস্তা হবে না বিধায় মেজো ভাই সাবু ছোট ভাইয়ের অংশ গ্রামের বাড়ি ভিটা ছেড়ে দিয়ে এওয়াজ বদল করেছেন। যাহা মীমাংসিত বিষয়। সেখানে প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে, বড়ভাই সুজা এসে অযথা বেড়া ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে গোন্ডগোল ও বিবাদ বাঁধিয়ে দেয়। যেখানে তার আসার কোনই দরকার ছিল না। তবুও এসে গোন্ডগোল বাঁধিয়ে সে নিজেই আবার থানায় গিয়ে অভিযোগ করেছেন বলে তারা জানান। ছোট ভাই সাজ্জাদ বলেন, সে সেনাবাহিনীর চাকরী সুবাদে তার পরিবার সহ বাহিরে অবস্থান করার সুযোগে তার বড়ভাই, তার অনেকাংশ জায়গা-জমিতে গাছ ও গৃহ নির্মান করে দখলে নিয়ে নেয়। বর্তমানে সে অবসরে গ্রহণের পর, নিজ গ্রামের বাড়িতে বসবাস করবে বলে গৃহ নির্মানের প্রস্তুতি নিলে,বড়ভাই সুজা তার জায়গা জমি ছেড়ে দিতে অস্বীকার করে এবং বেশি বাড়াবাড়ি করলে তার স্ত্রীকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করবে বলেও হুমকি দিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা নাম নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান। প্রায় ১০ বছর থেকে চলছে তাদের ভাইয়ে ভাইয়ে গোন্ডগোল। থানা এবং কোর্টে মামলাও হয়েছে। স্থানীয় ভাবে বহুবার শালিশও হয়েছে শুধু তাদের বড়ভাইয়ের গোড়ামির কারনে সুরাহা হয় না। তাদের বড়ভাই সুজার বিরুদ্ধে এলাকার মসজিদের অর্থ কেলেংকারী জন্য, মসজিদ কমিটি থেকে তাকে অব্যহতি দিয়েছে এবং স্থানীয় হাফেজিয়া মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক এর দ্বায়িত্বে থাকা কালীন অবস্থায়, অন্যের জমিতে জোরপূর্বক ধান কেটে নিয়ে আসলে,স্থানীয়রা তাকে সেই মাদ্রাসার কমিটি থেকে বহিষ্কার করেন এবং তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়েছে বর্তমানে তা চলমান রয়েছে। তারা জানান, উভয় পক্ষের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য গনেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাবুল চৌধুরীর কাছে উভয় পক্ষই একটি সঠিক সুরাহা চেয়েছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে মো. রবিউল আলম সুজার সাথে মেবাইলে কথা বললে পুরোটাই অস্বীকার করে তিনি বলেন, আগামী শনিবারে চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে উভয় পক্ষই বসার কথা আছে এবং তিনি বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব শান্তিশৃংখোলা বজায় রাখার জন্য যে ফায়শালা করে দেবেন, তিনি তা মেনে নেবেন বলে জানান।