লক্ষ্মীপুরে সাবেক স্ত্রী সেলিনা আক্তারের দায়েরকৃত যৌতুক ও নির্যাতন মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
গত বুধবার (১৮ জুন) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট (আমলী অঞ্চল রায়পুর) আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমানের অভিযোগ, সেলিনা মামলায় প্রতারণার মাধ্যমে কাবিননামায় দেনমোহরের ১ লাখ টাকার অংক পরিবর্তন করে ২১ লাখ টাকায় উল্লেখ করেছে। এজন্য তালাকের নোটিশ দিলেও ঘটনাটি মীমাংসা করা হয়নি। কাবিননামার সঠিক তথ্য যাচাইয়ের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন তিনি।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সাইফুদ্দিন জানান, স্ত্রীর মামলায় আদালত থেকে গত ৩ জুন আসামি মোস্তাফিজুর রহমান জামিন নেন। বুধবার জামিন মেয়াদের শেষ দিন ছিল। এরমধ্যেই ঘটনাটি মীমাংসা করার কথা ছিল। কিন্তু আইনজীবী তা করেননি। এতে তিনি পুনরায় জামিন আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। তার পক্ষে অন্য কোন আইনজীবী ছিলেন না। তিনি নিজেই শুনানি করেন। কাবিননামার আবেদন তিনি করেছেন।
গ্রেপ্তার মোস্তাফিজুর রহমান রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী গ্রামের মৃত তোফায়েল আহাম্মদের ছেলে। বাদী সেলিনা একই গ্রামের দেওয়ান বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে।
এজাহার সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে ৩০ জানুয়ারি মোস্তাফিজ ও সেলিনার বিয়ের কথা হয়। ২০২০ সারের ২৮ জানুয়ারি ২১ লাখ টাকার দেনমোহরে সামাজিকভাবে তারা বিয়ে করে। তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ব্যবসার কথা বলে টাকা চাইলে সেলিনা তার স্বামীকে ১২ লাখ টাকা ধার দেয়। ওই টাকা না দিয়েই ফের ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে মোস্তাফিজ। ওই টাকার জন্য ২০২৫ সালের ১৪ মার্চ মারধর করে সেলিনাকে তিনি বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর থেকে শিশু সন্তানকে নিয়ে সেলিনা বাবার বাড়িতে আছে। মোস্তাফিজ তাদের কোন খোঁজ খবর নিচ্ছে না। এ ঘটনায় যৌতুক আইনে গত ২৮ এপ্রিল আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেলিনা।
এদিকে ৮ এপ্রিল মোস্তাফিজ তার স্ত্রী সেলিনাকে তালাকের নোটিশ দেন। তালাকের হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন ১ লাখ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে হয়। তার সঙ্গে বিয়ের আগেও সেলিনার আরও ২টি বিয়ে হয়। সেখানে তার ১৫ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এসব ঘটনায় পারিবারিক কলহে অতিষ্ঠ হয়ে সেলিনাকে তিনি তালাকের নোটিশ দেন।
অন্যদিকে মোস্তাফিজের দাবি তাদের বিয়ে কাবিনে দেনমোহর ছিল ১ লাখ টাকা। কিন্তু প্রতারণার মাধ্যমে ১ লাখ এর স্থলে ২১ লাখ টাকা বানিয়ে আদালতে মামলায় দেনমোহরের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে মোস্তাফিজ আদালতের কাবিননামার মূল কপি ও কাজী মো. ইসরাফিল হোসেনের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করেছেন। কাবিননামার সঠিক তথ্য যাচাইয়ের জন্য তিনি আদালতে আবেদন করেছেন।