নওগাঁর বক্তারপুরে সুলতান স্থানীয় চেয়ারম্যান ও শশুড় গোষ্ঠীর যোগ-সাজসে বাড়ী-ঘর ছাড়া


এ.বি.এম.হাবিব (নওগাঁ)
নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সারোয়ার কামাল চঞ্চল ও সুলতানের  স্বমন্দি এনামুল গোষ্ঠীর যোগ-সাজসে প্রায় ১বছর থেকে সুলতান নিজ ঘর-বাড়ীতে যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

অভিযোগ কারী সুলতানুর রেজা সুলতান (বুলু) জানান, গত ১৯৮৭ সালে পাশবর্তী বাড়ীর মৃত দছির উদ্দিন সরদারের মেয়ে নাজমা খাতুনকে ভালোবেসে পরিবারের অমতে বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রীর ৭ জন ভাইয়ের মধ্যে ৪নম্বর ভাই এনামুল সুলতানকে  হত্যা করার জন্য বহুভাবে চেষ্টা করে আসছিল যাহা  স্থানীয় ইসমাইল,ও তার স্ত্রী, মালতি,রাশেদা,মোকসেদ আলি অবগত। সুলতান নাজমাকে বিবাহের পরে তার  সংসার জীবনে  স্বমন্দী এনামুল গোষ্ঠী থেকে দুরত্ব বজায় রেখে  মা,বাবা,স্ত্রী,সন্তান নিয়ে সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে ছিল। পাশাপাশি সুলতান স্থানীয় মসজিদে  নামাজ পড়তেন আযান দিতেন এমনকি  ততকালীন সময় থেকে মরহুম মিরবক্স মন্ডল মরহুম মোশাররফ মন্ডল  মরহুম জালাল মন্ডল মরহুম হাসিফুল ইসলাম মরহুম আব্দুর রহমান চৌধুরী মরহুম আঃমান্নান সহ জনাব মন্জুর উদ্দিন বাবুল আলহাজ্ব মোকলেছুর রহমান মহসিন আলী সাইফুল ইসলাম বাদল হোসেন খোরশেদ আলম হাসান মুরাদী সহ সকল স্তরের মানুষের সাথে থেকে স্থানীয়  বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজে নিয়জিত ছিলেন।  সুলতান বলেন গত ২০০৩  জমি জমার বিষয়াদী নিয়ে  চাচাতো ভাইদের সাথে সুলতানের অপ্রকাশ্যে মনোমালিন্য রয়েছে।  সুলতানের স্বমন্দি এনামুল গং পরিবারের অসামাজিক কার্যকলাপে ২০০০ সালে গ্রাম বাসি তাদের আটক দেওয়ায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হইলে  ১৩ বছর পর আপোষের কথা বলে তাদেরকে মেনে নিয়ে  এনামুল  তার নিজ বাড়ীতে স্বপরিবার নিয়ে সুলতানকে থাকার ব্যাবস্থা করে দেয়। এরপর এনামুল  নিজ বোনকে আয়ত্বে  নিয়ে সুলতানের  উপর  প্রতিশোধ নেওয়ার পাঁয়তারা শুরু করিলে, বিষয়টি বুঝতে পেরে সুলতান তার স্বপরিবার  নিয়ে  নিজ বাড়িতে  আশ্রয় নেয়। এরপরেও নিজ বাড়ীতে তার বৃদ্ধ মা ও স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। সুলতান  (বুলু)  ধামুইরহাট থানার আড়ানগর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা হাসপাতালের অফিস সহায়ক পদে  চাকুরী করতেন। এরমধ্যে আবারও তার স্ত্রীর ভাই এনামুল তার স্ত্রীকে বিভিন্ন ভাবে কুটুবুদ্ধি দিতে  থাকে। এক সময় স্বামী-স্ত্রীর মাঝেও চরম ভাবে দন্দ শুরু করে দেয় এনামুল। এরপর থেকে সুলতানের  স্ত্রী তার ভাইদের অপশক্তিতে সুলতানকে  বিভিন্ন রকম সন্ধেহ, তর্ক-বিতর্ক, এমনকি  সুলতানের বয়োবৃদ্ধ মাকে আকাশে নিম্নচাপে বৃষ্টিতে ভিজে নির্যাতন করা সহ  একাধিক বার  হাত তুলতে একটুও  চিন্তা বিবেচনা  করেনি তার  স্ত্রী নাজমা।বহুমুখী বিশৃঙ্খলা শত্রতার মধ্যে দিয়েও সুলতান সংসার পরিচালনা ও ৪টি সন্তানের লিখাপরা ২টি সন্তানের বিবাহ এবং ছেলের চাকরির সুব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।সুলতান বলেন  অনাকাঙ্ক্ষিত  বিষয় গুলো নিষ্পত্তির জন্য  নিজে উদ্যোগ নিয়ে  তার স্ত্রীর ভাই ভাতিজা   উজ্জ্বল এবং গুলবাহারের  বাড়ীতে ইয়াদালি, আবুল, বাদল হোসেন, মিঠু সহ ৩৫/৩৬ জনকে নিয়ে ১১বার শালীশী বৈঠক করেও স্ত্রীর ভাই  এনামুলের অসহযোগিতার কারণে আপোষ নিষ্পত্তি  হয়নি। অবশেষে ২০২৩ স্থানীয়  চেয়ারম্যান বরাবর  সুরাহা চেয়ে অভিযোগ করলে  (চন্চল) চেয়ারম্যান স্ত্রীর ভাই এনামুল গোষ্ঠী, স্থানীয় আওয়ামী যুব উন্নয়ন ক্লাব, এবং মুরাদপুর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সংগঠন দ্বারা পরিচালিত হয়ে ঢাকাতে বাদী-বিবাদী কাউকেই উপস্থিত না করে, একতরফা মিটিং সম্পুর্ন  করেন ও এর সিদ্ধান্ত  মেসেঞ্জারে সুলতানকে অবগত করেন। যাহাতে লিখা ছিল সবকিছু বুলুর  দোষ। সুলতান জানান বিনে  কারণে চেয়ারম্যান  আমার প্রতি পক্ষ হওয়ায় চরম শত্রুরা সৃষ্টি হইলে মুক্তি পাওয়ার আশায় হাসাইগাড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সোহেলকে নিয়ে চেয়ারম্যান এর চেম্বার প্রাইম ল্যাব ক্লিনিকে গিয়ে সরাসরি চেয়ারম্যান এর পা ধরে অনুরোধে করেন অতঃপর ও চেয়ারম্যান বিবেচনা না করে সুলতান এর প্রতি প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্য ক্ষতি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এজন্য সুলতান  সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা হিনতায় ভুগিতেছে বলে জানান। 

 এ বিষয়ে স্থানীয় একাধিক সচেতন ব্যক্তিগণ মনে করেন,সুলতান  বিচার প্রার্থী হয়েছে চেয়ারম্যানের কাছে আর সিদ্ধান্ত এসেছে ঢাকা থেকে, যাহা একদম বেমানান। তাই বিষয়টি যুক্তিযুক্ত নয়। তারা আরও জানান, শুধু মাত্র সুলতান (বুলু)কে স্থানীয়  মসজিদ ঈদগাহে যেতে না দেওয়ার জন্য স্থানীয় ঘুটু, এনামুল এবং টাইগার(যাহা চেয়ারম্যানের পারসোনাল লোক)এর নেতৃত্বে  ঢাকা থেকে  মসজিদ, ঈদগাহ কমিটি গঠন করে গত  ২০ বছর ধরে  দখলে রেখেছেন বলে জানা যায়। এরপর উক্ত সংগঠনের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক কনক বাদী  হয়ে চেয়ারম্যান এর নেতৃত্ব  বহিরাগত,স্থানীয় শতাধিক লোকজন নিয়ে স্থানীয়  মোস্তাফিজুর,রাজন,ডবলু, রোজিনা সহ কোর্টের জারি কারক রেন্টুর বিরুদ্ধে  ২০/১২/২৪ ইং শুক্রবার বাদ আছর কনকের বাবা, আবু বক্কর সিদ্দিক মাষ্টারের খলিয়ানে  বৈঠক বসলে, সেখানে সুরাহা না হতেই,চেয়ারম্যান রেন্টুকে মারপিট  শুরু করে,যাহা একটি ভিডিও ফুটেজে তা দেখা যায়। রেন্টু দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলে পরবর্তীতে সুলতানকে অযথা মারপিট করতে শুরু করে এবং  মারতে মারতে  পুকুরে ফেলে দেয়।
 স্থানীয়রা বলেন, ঐসব অভিযুক্তরা বহিরাগত এবং চেয়ারম্যান এর লোকজন। পরবর্তীতে সুলতান বুলু প্রাণ ভয়ে  পালিয়ে গেলে বহিরাগত লোকজন পুলিশ  সহ সুলতানের বাড়ি তল্লাশী চালিয়ে পরিশেষে স্থানীয়  গ্রাম পুলিশ জোতিষ কে বাদী করে রেন্টু ও সুলতানুর রেজার বিরুদ্ধে  একটি  মিথ্যা মামলা করে। যার নম্বর-জিআর ৫৮০/২৪ইং  নওগাঁ। বর্তমানে যাহা নওগাঁ কোর্টে চলমান রয়েছে। 

সরেজমিনে গিয়ে  স্থানীয় জনগণের মাধ্যমে  জানা যায় , চঞ্চল চেয়ারম্যানের দলীয় প্রভাবে  এলাকার লোকজন ভীতু হয়ে  উক্ত ঘটনা নিয়ে  মুখ খুলতে চাচ্ছিল না। নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয়  একাধিক ব্যাক্তিবর্গ জানান, সুলতান বুলু শিক্ষিত একজন ভালো ছেলেই ছিল।সে সবার সাথে মিশে যে কোন লোক বিপদে পড়লে ছুটে চলে যেতো।  সে প্রেম-ভালোবাসা করে বিয়ে করেও ভালো ছিল তারা। কিন্তু যখন থেকে তার স্বমন্ধী এনামুলের মিষ্টি কথায় তার বাড়ীতে উঠে, তার পর থেকে গোন্ডগোল শুরু হয়। সেই যে শুরু হয়েছে তা আর থামছে না। সুলতানের পরিবার নিয়ে বহুবার শালিশ-দরবার হয়েছে এবং গোটা ইউনিয়নের সিনিয়র নেত্রীবৃন্দকে নিয়ে মানিকের খলিয়ানে  দরবার করে ও পরবর্তীতে কোনই কাজে আসে না। স্ত্রীর সাথে এগুলো ঝামেলার কারণে ১ম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার সে ২য় বিয়েও করেছিল।  পরবর্তীতে  ১ম স্ত্রীর ভাই ভাতিজা ও চেয়ারম্যান এর  কু-বুদ্ধিতে প্রথম স্ত্রী, সুলতানের বিরুদ্ধে একাধিক  মিথ্যে মামলা সহ  ১ম স্ত্রীর ভাই-ভাতিজারা মিলে চাপের উপর ফেলে দেয়। ২য় স্ত্রীকে জোরপূর্বক তালাক দেওয়ায় এবং  ১ম স্ত্রীকে তারা সবাই মিলে জোরপূর্বক  ৫ লক্ষ টাকার  দেন-মোহর ধার্যে পুনরায়  সুলতানকে বিবাহ করিতে বাধ্য করায় বলে জানান। সুলতান এগুলো  মেনে নিয়েও নতুনভাবে সংসার শুরু করেছিল।  স্ত্রীর ভাই এনামুল ও চেয়ারম্যানের যোগসাজসে আবারও তার স্ত্রী নাজমাকে  কুবুদ্ধি দিয়ে  সুলতানের বাড়ী ঘর জায়গা জমি বেতনের টাকা  স্ত্রীর নামে রেজিষ্ট্রি নেওয়ার জন্য আবার গন্ডগোল শুরু করে দেয়। সুলতানের স্ত্রী, সুলতানের ঘর সংসারে থেকে তার খেয়ে পড়ে দ্বিতীয় বার উক্ত ৫ লক্ষ টাকা দেনমোহর,খোরপোষ দাবী করে আবারও  ৩টি মামলা করে।  মধ্য-মুরাদপুর গ্রামের জনৈক  আবুবকর সিদ্দিক মাষ্টারের খলিয়ানে দরবারের  অনাকাঙ্ক্ষিত বিশৃঙ্খলার একটি ভিডিও ফুটেজ হাতে আসিলে সে মোতাবেক ঐ দরবারে উপস্থিত এলাকার  গন্যমান্য ব্যক্তি, জনাব রফিকুল ইসলাম (হোগলবাড়ি),যুবদল নেতা  আফাজ উদ্দিন (বিডিআর ক্যাম্প) সুমন হোসেন, গ্রাম পুলিশ জোতিষ,  হাছান মুরাদী,মতিন হোসেন (ডবলু)রোজিনা  সর্ব সাং মুরাদপুর  সহ অনেকের ঐ দরবারে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়। স্থানীয়দের সাথে দর্শক হিসেবে সেখানে সুলতানও  উপস্থিত ছিলেন। অযথাই সুলতান কে মারপিট করে পুকুরে ফেলে দিয়ে, মান-অপমান করে, সুলতানকে গ্রাম থেকে বের করে দিয়ে তার উপর মিথ্যে মামলা চাপিয়ে দেয়। বর্তমানে শত বছর পার বয়োবৃদ্ধ সুলতানের মা  ঐ বাড়ীতেই বিভিন্ন নির্যাতন সহ্য করে বসবাস করছে বলেও জানান।

এ বিষয়ে সুনতান (বুলু) র কর্মস্থলে গিয়ে সাক্ষাৎ কালে দেখা যায়, তিনি হাসপাতালে ১টি রুমে  নিজেই রান্না করে  খেয়ে পড়ে কোন ভাবে জীবন যাপন করছেন। সুলতান জানান, যেহেতু সুলতানের স্ত্রী সুলতানের বাড়ীতে বসবাস করার পরও যে স্ত্রী  চেয়ারম্যানের যোগ-সাজসে তার বিরুদ্ধে   একাধিক  ভিত্তিহীন মামলা করে এবং  দৃশ্যমান  স্ত্রীর ভাই এনামুল গোষ্ঠী সহ বহিরাগত লোকজন দিয়ে তাকে  মারপিট ও মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে, তাই আগামীতে আরো বড় রকমের ক্ষতির আশংকা থেকে রক্ষা পেতে গত ১৭/৬/২৫ ইং তারিখে স্ত্রী নাজমাকে ২য় বার তালাক দিয়েছেন বলে জানান।  সুলতান  বলেন, তার  বাবার অবর্তমানে মায়ের বার্ধক্যজনিত কারণে তার সংসার,পরিবারের যাবতীয় স্বয়-সম্পত্তি বাড়ি ঘর তার এবং আমার নামীয়। ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী একজন তালাক প্রাপ্তা স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে  বহুমুখী নিপীড়ন নির্যাতন ও অপশক্তি প্রয়োগ করা ও স্বামীর  বাড়ি  দখলে নেওয়া, এটা স্বাধীন এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে  বেমানান দেখায় বলে জানান।  তিনি এর সঠিক তদন্ত চেয়ে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়ার দাবী জানান। 

এ বিষয়ে বক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সারোয়ার কামাল চঞ্চল সকল কিছু অস্বীকার করে বলেন, সে চেয়ারম্যান হয়েছে মাত্র ৩ বছর পার হয়েছে কিন্তু তাদের স্বামী-স্ত্রীর গোন্ডগোল তারও ২০/২৫ বছর আগে থেকে। তারা স্বামী-স্ত্রী দু,পক্ষই তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। সুলতানুর রেজার পক্ষে কোন লোকজন নেই বা কোন লোকজন সাক্ষ্য দিতে চায় না  বিধায় সকল কিছু প্রমানাদী স্ত্রীর পক্ষে চলে যায়। আদালতে মামলা চলমান থাকায় তিনি ঐ স্বামী-স্ত্রীর বিষয়টির কোন সুরাহা করতে পারেন নাই বলে জানান।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, যেহেতু সুলতান তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে, সেহেতু সেই স্ত্রীর ঐ বাড়ীতে থাকার কোনই অধিকার নেই। তার জন্য আবারও বিয়ে অথবা আদালত মাধ্যমে এর সুরাহা হওয়ার আগে,তার স্ত্রী নাজমার ঐ বাড়ীতে জোর-পূর্বক বসবাস,থাকা,খাওয়া ধর্মীয় ও আইনগতভাবে একেবারেই বেমানান ও উচিত নয়।  গ্রামের মধ্য ভবিষ্যতে বড় ধরনের গোন্ডগোল সৃষ্টি বা আইন শৃংখলার অবনতি হওয়ার আগেই সুলতানের বাড়ী থেকে তার স্ত্রী নাজমার চলে যাওয়া উচিত বলে জানান। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন