সাভারে যৌতুকের টাকা না পেয়ে পুত্রবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে শ্বশুর আটক

নিহত গৃহবধূ লতা বেগম (২০) (বায়ে), আটক শ্বশুর  (ডানে) ছবি : সংগৃহীত

সাভারে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে তার শ্বশুরকে আটক করা হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে জেলার তেঁতুলঝড়া ইউনিয়নের শাহী মসজিদের পাশে সোলেইমান মেম্বারের মালিকানাধীন ভাড়া বাড়ি থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

খুন হওয়া গৃহবধূর নাম লতা বেগম (২০)। সে ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানার দিয়ানগর গ্রামের মো. আব্দুস সালামের মেয়ে। স্বামীকে নিয়ে লতা সাভারের তেঁতুলঝড়া এলাকায় সোলেইমান মেম্বারের মালিকানাধীন ভাড়া বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে সেলিম নামের এক যুবকের সাথে লতার বিয়ে হয়। বিয়ের পর 
প্রথমে লতা ও তার স্বামী সেলিম সাভারে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করা শুরু করেন। কিছুদিন পর গৃহবধূ লতার মা-বাবা ও তার শ্বশুর-শ্বাশুরিও একই জায়গায় বাসা ভাড়া নেয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য স্বামী সেলিম ও শ্বশুর মাসুদ মিয়া গৃহবধূর লতাকে চাপ দিয়ে আসছিল। একপর্যায়ে যৌতুকের টাকা না পেয়ে শনিবার দুপুরে শ্বশুর মাসুদ মিয়া পুত্রবধূ লতাকে ধর্ষণের পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

স্থানীয়রা আরো জানায়, দুপুরে ঘরের মধ্যে লতা বেগমের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ দেখতে পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশকে খবর দেয় প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে বিবস্ত্র অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীরা পুত্রবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে শ্বশুর মাসুদ মিয়াকে গণপিটুনি দেয়। এ সময় তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

নিজেকে বাঁচাতে শ্বশুর মাসুদের শরীরে আঘাত করলে পুত্রবধূ তার সাথে পেরে উঠেনি বলে দাবি স্থানীয়দের।

নিহত লতার বাবা আব্দুস সালাম বলেন, ‘শ্বশুর মাসুদ, স্বামী সেলিম ও সবুজসহ চারজন মিলে আমার মেয়েকে ধর্ষণের পরে হত্যা করেছে। ঘটনার পর থেকেই স্বামী স্বামী সেলিম মিয়া পলাতক রয়েছেন। আমি যৌতুকলোভী হত্যাকারীদের বিচার চাই।’

পুত্রবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে শ্বশুরকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম সবুজ।

তিনি বলেন, নিহত গৃহবধূর বিবস্ত্র মরদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না সেটা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় নিহতের শ্বশুরকে আটক করা হয়েছে এবং নিহতের স্বামীকেও আটকের চেষ্টা চলছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের সাথে আরো অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা সে বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন