নওগাঁর মান্দায় অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রবাসীর টাকা আত্মসাৎ

মালয়েশিয়া প্রবাসীকে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তানিয়ার বিরুদ্ধে। ছবি : সংগৃহীত

এ. বি. এম. হাবিব (নওগাঁ) : 

নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কশোপাড়া ইউনিয়নের মুন্না পাড়ার মালেকের মেয়ে তানিয়া মালয়েশিয়া প্রবাসী ফজলু রহমানকে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১লক্ষ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, কাশোপাড়া ইউনিয়নের মৃত- গফুরের ছেলে মোঃ ফজলু রহমান পরিবারের স্বচ্ছলতার কথা ভেবে  মালয়েশিয়ায় যান। হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তানিয়া নামের এই মেয়ের সাথে তার পরিচয় হয়। এরপর থেকে ধিরে ধিরে প্রেমের সম্পর্কের ফাঁদে ফেলে দেয় তানিয়া। ওয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলে প্রতিদিন কথা হত এবং শরীরের বিভিন্ন গোপন অঙ্গ প্রদর্শন করে বিভিন্ন অঙ্গ-ভুঙ্গিতে কথা বলে আকর্ষিত করতো প্রবাসী ফজলুকে। এরই ফাঁকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে, তার সাথে বিয়ে হবে,এমন বিভিন্ন স্বপ্ন দেখিয়ে, বিভিন্ন অজুহাতের কথা বলে টাকা নিতে শুরু করে।  ফজলুর রহমানকে, টাকা কেন দিলেন ফোনে এমন কথা জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়,প্রতিদিন ওয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলে কথা হত,আর তার শরীরের এমন কোন অঙ্গ নাই,সে আমাকে দেখায় না। শরীরেরর সকল অঙ্গই সে আমাকে দেখাতো,আর বিভিন্ন ভাবে টাকা চাইতো,তাই আমি তাকে বিশ্বাস করেই টাকা গুলো দিয়েছি। এ পর্যন্ত কত টাকা দিয়েছেন জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়,সর্বমোট ১লক্ষ ৩০হাজার টাকা তাকে দিয়েছে বলে জানায়। সে আরো জানায়, তানিয়া তার মা-বাবার সাথেও ফোনে কথা বলিয়েছে,পরিবারের সকলের সাথে কথা বলিয়েছে এমন কি ইসমাইল মৃধা ঐ বাড়ীতে সব সময় যাতায়ত করে,সেও তার সাথে কথা বলছে এবং বলেছে,টাকা পয়সা যা লাগে তানিয়াকে দিতেও বলেছে,সে তার সাথেই বিয়ে হবে বলেও জানিয়েছে। ফজলু জানায়, পরবর্তীতে সে ভালো করে  খবর নিয়ে জানতে পারে,তারা পরিবার সহ সকলে এই ধান্দা করেই চলে,শুধু তার সাথে নয়,আরো একাধিক ছেলেকে এভাবে প্রলোভনে ফেলে টাকা আদায় করেছে। আর ওই মেয়ে,প্রথমে ফজলুকে অবিবাহিত বলে, কথা বলতো, কিন্তু ভালো করে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে,ওই তানিয়া নামের মেয়ের এর আগে ৫ জায়গায় বিয়ে হয়েছিল এবং একটি সন্তানও রয়েছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিকরা ঠিকানা অনুযায়ী সেই বাড়ীতে উপস্থিত হলে, একক ফাঁকা জায়গায় এই বাড়ীটিতে কেহই নাই বলে একজন মহিলা জানায়। এরপর সাংবাদিকরা বলে,কোন ভয় নেই, আমরা শুধু একটি বিষয় জানতে এসেছি, বাড়ীর লোকজনদের একটু ডেকে দিন। পরবর্তীতে ঘর থেকেই বের হয়ে আসে তানিয়ার মা ও তানিয়া নামের সেই মেয়েটি। কিছু ক্ষনের মধ্যে  এলাকার বেশ কয়েকজন মহিলা,পুরুষও সেখানে উপস্থিত হয়।  তাদেরকে এই বিষয় গুলো জিজ্ঞাসা করলে তানিয়া ও তার মা ডেজি সবকিছু বিষয় স্বীকার করে।  কিন্তু তারা টাকার বিষয়ে বলে,১লক্ষ ৩০ টাকা তারা নেয় নাই, শুধু ২৭হাজার টাকা এ পর্যন্ত নিয়েছে বলে স্বীকার করে। তানিয়ার মাকে, তানিয়ার কয়টা বিয়ে হয়েছে এ পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করলে সে বলে,মাত্র ৫ জায়গায় বিয়ে হয়েছিল এবং একটি সন্তানও রয়েছে বলে স্বীকার করে। তানিয়া বলে,সব শেষে যেখানে বিয়ে হয়েছিল, সেখানকার একটি সন্তান রয়েছে, বর্তমানে সেই ছেলের কাছে আবারও ফিরে যাওয়ার জন্য কথাবার্তা চলছে বলে জানায়। ফোনের মাধ্যমে আরো কাহারো কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা আদায় করা হচ্ছে কি-না জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে, এমনি কথা বার্তা বলা হয় তবে এখনো তাদের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেয় নাই বলে জানায়। ভুক্তভোগী ফজলু এ বিষয়ে আইনগত ব্যাবস্থা নেবেন বলে জানান।

স্থানীয়রা জানায়, এরা এখানে আলাদা ভাবে বসবাস করে অনেক রকম কুকৃত্তি চালায়,যাহা সমাজে নিন্দনীয়। সমাজের একাধিক লোকজনও তাদের বাড়িতে যাতায়ত করে। দেখতে খারাপ লাগলেও কিছু বলা যায় না। ইসমাইল মৃধা সব সময় যাতায়ত করে, তার ভাই ছাত্তার মৃধাও যাওয়া-আসা করে। এদের বাড়িতে যাওয়া নিয়ে জাহাঙ্গীর, সাত্তার মৃধার গন্ডগোল মারামারিও হয়েছে এবং তা নিয়ে শালিশও হয়েছে। এলাকার পরিবেশ দুষিত করছে তারা। প্রবাসীদের হোক আর বাংলাদেশের হোক,এরা এই ব্যবসায় করে। এগুলো মানুষের সাথে প্রতারনা করে, টাকা আত্মসাৎ করা সমাজে খারাপ, আইনতও অপরাধ।  এদের সঠিক বিচার হলে,সমাজে এমন ঘৃনিত কাজ অন্য কেও আর করার সাহস পাবে না এবং এদের এই রকম কর্মকাণ্ডের জন্য আইনগত ব্যাবস্থার দাবী জানান এলাকাবাসী।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন