গণ অধিকার পরিষদের ২ নেতাকে চাঁদার টাকা আদায়ের সময় আটক


এ.বি.এম.হাবিব :

নওগাঁয় গণ অধিকার পরিষদের নেতা পরিচয়ে হুমকি ও চাঁদার দাবীকৃত টাকা নেওয়ার সময় হাতে-নাতে আটক করেছেন নওগাঁ সদর মডেল থানার পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টা সময় নওগাঁ পুলিশ সুপারের কার্যলায়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার  মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার এসব তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নওগাঁ সদর উপজেলার চুন্ডিপুর ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামের মোঃ হাবিবুল্লাহ স্ত্রী  মোছাঃ মুসফিকা নাজনিন,সদর উপজেলার প্রানী সম্পদ অফিস ও ভেটেনারী হাসপাতালে লাইফস্টক ফিল্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট পদে কর্মরত রয়েছেন। গণ অধিকার পরিষদের নেতা পরিচয়ে, দুই যুবক আরিফ ও ফরহাদ ওরফে সোভন তার অফিসে গিয়ে আওয়ামীলীগের সমর্থক তকমা দিয়ে, হুমকি-ধমকি দিয়ে প্রথমে চাঁদা দাবী করে। সেখানে তার ফোন নম্বর নিয়ে, ফোনের মাধ্যমেও চাঁদার টাকা দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।  মুসফিকা বিষয়টি তার চাচাত ভাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহযোদ্ধা মোঃ রতমকে জানায়। রতন তার ফোন থেকে আরিফকে কল করে জানতে চায়,তার বোনের কাছ থেকে কেন চাঁদার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।  তখন আরিফ সামনা-সামনি দেখা করতে বলে।


গত (১৭ সেপ্টেম্বর)  আসামীরা রতনকে ফোন করে নওগাঁ শহরের লিটন ব্রীজের নিচে চায়ের দোকানে ডেকে নেয় এবং তাকে বলে, গত ২০২২ সালে রাজনৈতিক কারণে আসামীর বাবাকে মারপিট করার ঘটনায় একটি মামলা করবে। সেই মামলায় মুসফিকা ও তার বাবার নাম দেবে এবং তার চাকরির ক্ষতি করবে বলে ভয় দেখায়। সেই মামলাতে তাদের নাম বাদ দিতে হলে,তাদেরকে ১ লক্ষ  ২৮ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে মর্মে বুঝায় ও ভয় দেখায় এবং ঐ টাকা দিয়ে আসামীরা গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঠিকাদারী লাইসেন্স করবে বলে জানায় এবং তাতে দুপক্ষেরই ভালো হবে বলে জানায়। আলোচনার একপর্যায়ে ৭০ হাজার টাকা নগদ দাবী করে আরিফ ওশোভন, নইলে মিথ্যা মামলা করবেই এবং আসামীও করবে বলে হুমকি দেয়। এরপর ওই দিন সন্ধ্যা অনুমান ৭.১৫ মিনিটে আসামীরা চন্ডিপুর ইউনিয়নের শিমুলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের এনামুলের মুদির দোকানে চাঁদা নিতে যায়। সেখানে মুসফিকার চাচাত ভাই রতম বর্তমানে ১০ হাজার টাকা দিতে পারবে আর বাঁকী ৬০ হাজার টাকা পরে দেবে বলে অনুরোধ করতে লাগলে,চাঁদাবাজরা ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং সেখানে হুমকি-ধমকি ও উচ্চবাচ্যে কথাবার্তা শুরু করে দেয় এবং সেখানে অনেক লোকজন জোড়ো হয়ে যায়।  বিষয় গুলো জানতে পেরে, নওগাঁ সদর মডেল থানার এস আই আব্দুলাহ আল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে, আসামীরা সকলের সামনে চাঁদা দাবী সহ সকল কথা স্বীকার করে।

পুলিশ তখন তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ওই নারী স্টাফ তাদের নামে থানায় চাঁদাবাজির মামালা দায়ের করলে, তাদেরকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আসামীরা হলো নওগাঁ শহরের মাষ্টার পাড়ার মৃত নুর ইসলামের ছেলে আরিফ ও চুন্ডিপুর ইউনিয়নের (মাদারমোল্যা) বলিরঘাট গ্রামের মোঃ এনামুল হকের ছেলে ফরহাদ হোসেন সোভন।


 সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, নওগাঁ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকীসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ও নওগাঁর সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন