এ.বি.এম.হাবিব :
নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার (সুতিহাট) গনেশপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপু গ্রামে কিস্তির টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে, গাক এনজিওর ৭জন মিলে অস্বাভাবিক মারপিট ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করেছে একটি পরিবারে ৩ জন সদস্য সহ উদ্ধার করতে আসা পার্শবতী একজন মহিলাকেও।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী সহ স্থানীয়রা জানান, ওমর ফারুক বহুদিন পূর্বে থেকে উপজেলার সুতিহাট পঞ্চমীতলা শাখা গাক এনজিও থেকে অর্থ ঋন লেনদেন করে আসছিল। ইতিপূর্বে কয়েকবার ঋন নিয়েছে এবং পরিশোধও করেছে। গত (২০ফেব্রয়ারি) তারিখে সে আবারও ২ লক্ষ টাকা ঋন নেয়। পক্ষান্তরে প্রতিমাসে কিস্তি প্রায় ২০ হাজার করে টাকা পরিশোধ করে আসছিলেন। চলতি মাসের ১০ অক্টোবর তারিখে, কিস্তির টাকা দেওয়ার তারিখ থাকায়,তিনি আগাম ফোন করে কিস্তি নেওয়ার লোককে জানায়,এ মাসে সম্পূর্ন টাকা জোগাড় হয় নাই। এ কথা শুনে গাক কর্মী মোবাইল ফোনেই ভিষন ভাবে রেগে, তাকে বিভিন্ন রকম অকত্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে দেয়। এবং বলে, যেভাবে পারিস্,অবশ্যই আজকেই টাকা দিবি, নইলে এটা করবো,সেটা করবো বলে খুব জঘন্য ভাষায় হুমকি দিতে থাকে,এমন পর্যায়ে ওরম ফারুক ফোন কেটে দেন। ভুক্তভোগী জানান, ঐ দিনেই।
রবিবার (১২ অক্টোবর) বৈকাল সাড়ে ৪টার সময় ম্যানেজার সহ ৭জন এসে জোর পূ্র্বক কিস্তির টাকা দাবী করে। ওমর ফারুকের কাছে থাকা ৮হাজার ৭০০ টাকা আছে বলে বের করলে, ম্যানেজার কামাল হামকি মেরে টাকাটা নিয়ে, বাঁকী আরো ১১ হাজার ৩ টাকা বের করতে বলে। তিনি বলেন,তার কাছে আর কোনই টাকা নেই,এরপর তাকে টানা-টানি,ধাক্কা- ধাক্কি শুরু করে দেয়। এক পর্যায়ে মারধর করতে লাগে এতে তার পরোনের প্যান্টা ও গেঞ্জি ছিড়ে যায়। তিনি বলেন,তার স্ত্রী ও ছোট ছেলে এগিয়ে আসলে, ছেলেকে কিল,ঘুষি,চরথাপ্পর দিয়ে মাটিতে ফেলে ২ জন এনজিও,র লোক একজন গলায় পা দেয়,অন্যজন পেটের নিচে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তার স্ত্রী জানায়, তাকে গাছের ডাল দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে, তার কাঁধের হাড্ডির জোড়া খুলে ফেলে দেয়, সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পার্শ্ববর্তী এক মহিলা এগিয়ে এসে মারপিটে বাঁধা দিলে, (তার কোলে বাচ্চা ছিল) তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে, ডান হাত দিয়ে প্রটেকশন দিলে,তার হাতে বৃদ্ধা আঙ্গুলটি ফেটে যায়। ওমর ফারুকের ছোটভাই আঃ আলীম সুতিহাট থেকে বাড়িতে এসে এগুলো পরিস্থিতি দেখে এগিয়ে আসলে তাকেও ৩/৪ মিলে টানা-হেচড়া করে এবং তিনি জানান, তার কমরে থাকা ব্যবসায়ী ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৭০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এভাবে তারা মারপিট করে মহিলা পুরুষ সহ ৪জনকে আহত করে। ভুক্তভোগী ওমর ফারুক অভিযোগ করে বলেন, এর আগে প্রায় ৫ বার এই এনজিও'র সাথে টাকা লেনদেন করেছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে ২ লক্ষ টাকা ঋন নিয়েছেন এবং এই ৮ মাসে মোট ৮৯ হাজার টাকা কিস্তিও তিনি দিয়েছেন এরপর সঞ্চয় রাখা আছে তাদের কাছে ৬৪ হাজার টাকা। এতো কিছুর পরও তারা তাদেরকে এ মাসের কিস্তি হিসেবে সঞ্চয় থেকে কেটে নিতে বললেও এনজিওর ম্যানেজার কিছুই শুনতে চান নাই,এ ধরনের মারপিট করে আহত করা, জোড়,জুলুম করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়া মানে, ছিনতাইয়ের মত করে ছোটভাইয়ের কলার ব্যবসার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া,এ ধরনের অমানবিক কর্মকাণ্ডের সঠিক বিচারের দাবী জানান প্রশাসনের কাছে। এ বিষয়ে তিনি বাদী হয়ে মান্দা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।বর্তমানে তার স্ত্রীকে মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে রেফার্ড করেছে রাজশাহীতে, তার হাড়ের জোরা মারপিট করে খুলে ফেলার কারণে। এ সকল কিছুর সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলার সুতিহাট (পঞ্চমীতলা) গাক শাখা অফিসের ম্যানেজার কামালের কাছে গিয়ে জানতে চাইলে, তিনি কোন কথাই বলবেন না বলে জানান এবং তাড়াহুড়ো করে অফিস থেকে মোটরসাইকেল যোগে বেড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে মান্দা থানার অভিযোগের তদন্ত অফিসার জানান,দু,পক্ষ থেকেই আভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত চলছে,তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।