ঝিনাইদহে সিও সংস্থার আয়োজনে দূরপাল্লার ডোঙ্গা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে


সুলতান আল এনাম,  ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :

ঝিনাইদহে সিও সংস্থার উদ্যোগে নবগঙ্গা নদীতে অনুষ্ঠিত হলো এক ভিন্নধর্মী দূরপাল্লার ডোঙ্গা বাইচ প্রতিযোগিতা। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতা ঘিরে নদীর দুই তীরে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে নবগঙ্গা নদীর পারমথুরাপুর নতুন ব্রীজ এলাকায় শুরু হয় অনুষ্ঠানটির আনুষ্ঠানিকতা। উদ্বোধনের আগে পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা। এরপর সকাল ৯টায় অতিথিদের উপস্থিতিতে শুরু হয় মূল প্রতিযোগিতা, যা শেষ হয় ঝিনাইদহ শহরের ধোপাঘাটা পুরাতন ব্রীজে।

মোট ৪৭ জন প্রতিযোগী এই দূরপাল্লার ডোঙ্গা বাইচে অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন ১৫ বছর বয়সী কিশোর থেকে শুরু করে ৭০ বছর বয়সী প্রবীণ মাঝি। নবগঙ্গা নদীর দুই তীরে শত শত মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। দর্শকরা নৌকার ব্যান্ডপার্টির তালে তালে নেচে-গেয়ে উপভোগ করেন এই ঐতিহ্যবাহী খেলা।

প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন আরাপপুর মাঝি পাড়ার নারায়ণ, যিনি সকাল ৯টা থেকে শুরু করে ১০টা ৪২ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছান। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন গিলাবাড়িয়ার দিপঙ্কর বিশ্বাস এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন আরাপপুরের অষিত কুমার।

বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় কাশার কলস ও সনদপত্র। অংশগ্রহণকারীরাও সনদ ও উপহার পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এড. এম. এ. মজিদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন— ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, ঝিনাইদহ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোয়াজ্জেম মিয়া, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সেক্রেটারি ও সমাজসেবক আহসান হাবিব রনক, কাঞ্চননগর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি এম. আক্তার মুকুল এবং ঝিনাইদহ সুইমিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন জুলিয়াস।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিও’র প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক সামসুল আলম।

বক্তারা বলেন, খেলাধুলা তরুণ সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখে এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে। এমন আয়োজন শুধু বিনোদন নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও নদীভিত্তিক জীবনের অংশ। আমরা চাই এমন আয়োজন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ুক।

নবগঙ্গা নদীর ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবিত করা, স্থানীয় ক্রীড়া সংস্কৃতি বিকাশ ও তরুণ সমাজকে অনুপ্রাণিত করাই ছিল এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য। দিনভর উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হওয়া এই আয়োজন ঝিনাইদহবাসীর মনে আনন্দ ও গর্বের অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন