মুরাদনগরে প্রথম শ্রেণির ছাত্র বলাৎকার, স্কুলে বৈঠকে হামলা, থানায় মামলা


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মুরাদনগরে  ইয়ামিন নামের এক বখাটের  বিরুদ্ধে প্রথম শ্রেণির ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে ক্লাস রুমে সামাজিক বিচার শালিসীতে মারামারি। ছাত্র-ছাত্রীরা আতংকে হয়ে ভয়ে ছুটাছুটি। 

আহত - ৫ জন। আদালতে ২টি মামলা হয়েছে। আসামিরা পালাতক ।

 এ অভিযোগে ওই ছাত্রের পিতা আবদুল কাইয়ুম বাদী হয়ে বলাৎকারের অভিযোগে ইয়ামিনকে আসামী করে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা করা হয় এবং ভিকটিমের চাচা

মোঃ মহসিন বাদী হয়ে ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে  মারামারির অভিযোগ এনে পৃথকভাবে  কুমিল্লার বিজ্ঞ আদালতে ২টি মামলা দায়ের করে।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল  ৯ টার দিকে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার চন্দনাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র (৭) চন্দনাইল গ্রামের পশ্চিম পাড়ার বাঙ্গানগর গ্রামের যাওয়া ব্রীজের পাশে খগেন্দ্র বাবু পুকুর পশ্চিম পাড়ে ঝোপঝাড় নিয়ে একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম রফু মিয়ার ছেলে  ইয়ামিন(২২) ওই ছাত্রকে মুখ চেপে ধরে বাঁশ ঝাড়ের ভিতরে নিয়ে মুখে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করে বলাৎকার করে।

চন্দনাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, বুধবার সকালে প্রথম শ্রেণির এক ছাত্র স্কুলে আসার পথে স্থানীয় এক বখাটে ইয়াসিন ওই ছাত্রকে মিস্টি চকলেট খাওয়াবে বলে বাশঁ ঝাড়ে নিয়ে পায়ূপথে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করে ব্যর্থ হয়ে ওই ছাত্রের মুখে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করে। এতে ছাত্র ভুমি করতে করতে স্কুলে প্রবেশ করলে স্কুল শিক্ষিকা ও আমাকে ঘটনা খুলে বলে। সাথে সাথে আমি তার বাবা মা ও স্থানীয় সাহেব সরদার ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করি। ঘটনাটি স্কুলের বাউন্ডারির বাহিরে হওয়ায় আমি আইনের আওতায় যেতে পারি নাই। দু দিন পর দুপুরে উভয় পক্ষকে নিয়ে স্থানীয় লোকজন স্কুলে একটি রুমে বৈঠক বসে। বৈঠকে দুই পক্ষ হাতাহাতি মারামারির ঘটনা ঘটে।

বিদ্যালয়ের বিচারক শ্রীকাইল সরকারি কলেজ সাবেক পিন্সিপাল গোলাম সারোয়ার বলেন, স্কুল ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগ নিয়ে গত বুধবার দুপুরে উভয় পক্ষকে নিয়ে আপোষ মিমাংসা এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বিষয়টি কি হয়েছে জানার লক্ষে চন্দনাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি রুমে বলাৎকারি ইয়ামিন, তার পিতাসহ এলাকার ইউপির সদস্য কায়দে আজম, প্রবাসী হাবিবুর রহমান, নসু মিয়াসহ ২০/২২জন গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গেদের নিয়ে বৈঠক বসলে উভয় পক্ষে মধ্যে কথাকাটি এক পর্যায়ে ছাত্র ও তার পিতা ও চাচা, মা ও ফুফুকে মারধর করে। পরে স্থানীয় সাহেব সর্দাররা তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা জন্য প্রেরণ করা হয়। এসময় কচিকাঁচা শিশু শিক্ষার্থীরা ভয়ে আতংকে ছুটাছুটি শুরু করে। 

স্থানীয়  সাবেক ইউপি সদস্য কায়দে আজম বলেন, বখাটে ইয়ামিনের বিরুদ্ধে এক স্কুল ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, বাঙ্গানগর গ্রামের আশ্রায়ন প্রকল্পের নির্মাণাধীন রড চুরি, মাদক সেবনসহ নানান অভিযোগ রয়েছে। এদের ভয়ে রাস্তায় চলাচল করতে মানুষ আতংকিত থাকেন।

এবিষয়ে অভিযুক্ত ইয়ামিনের পিতা রফিকুল ইসলাম রফু মিয়া বলেন, উক্ত ঘটনাটি আমার ছেলে ইয়াসিন বিচারে অস্বিকার করলে ওই ছাত্রের পিতা আঃ কাইয়ূম ও চাচা মোঃ মহসিন আমার ছেলে ইয়াসিনের গালে চড়থাপ্পড় লাগায়। এতে আমার লোকজন উত্তেজিত হয়ে উঠে। উভয় পক্ষকে মারামারি ঘটনা ঘটে। বলাৎকার বিষয়ে আমার ছেলে জড়িত নয়। আমার ছেলে পুরান ঢাকায় একটি হুশিয়ারি কারখানায় চাকুরী করে।

কুমিল্লা জজ কোর্ট এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ তমাল বলেন, আমার মক্কেল আব্দুর কাইয়ুম বাদী হয়ে কুমিল্লা বিজ্ঞ  নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৩ নং আদালের বিজ্ঞ বিচারপতি সারোয়ার আলম আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কুমিল্লা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করতে নিদর্শনা প্রদান করেন। অপর মারামারি মামলাটি সিআইডি তদন্ত করতে নিদর্শন দেওয়া হয়।

বাঙ্গরাবাজার থানা অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনে সাথে সাথে ওই গ্রামের আমার অফিসার পাঠানো হয়েছে। পরে তারা থানায় মামলা না করে কুমিল্লা জেলা বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এলাকার অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন