Daily News BD Online

প্রশংসায় ভাসছেন ডা. ফরিদ


আঃআলিম, সাপাহার (নওগাঁ):

নওগাঁর পোরশায় মধ্যরাতে সদ্য ভূমিষ্ঠ এক শিশুকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফরিদ এইচ খান। জানা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাতে বাড়িতে প্রসবকৃত শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তার পরিবার। এর আগে গ্রামের নারীরা দীর্ঘ সময় ধরে শিশু প্রসব করান। প্রসবের পর শিশুটি মৃতবৎ ধারণা হয়। স্বজনরা সাথে সাথেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠে শিশুটি।
এ ব্যাপারে ওইদিনেই ডা. ফরিদ এইচ খান তার ফেইসবুক পেজে লিখেন, সারা দিনের ক্লান্তিসহ হাসপাতালে আসলাম নাইট ডিউটি করতে।
ডিউটিতে আসার পর থেকেই একের পর এক রোগী আসতেছে। কেউ মারামারির রোগী, কেউ অ্যাক্সিডেন্ট করে, কেউ বিষ খেয়েছে, কারো বা ডায়রিয়া হয়েছে।
রোগী। দেখা শেষ করে একটু রেস্টের জন্য রাত ১১টায় রুমে ঢুকলাম আর অমনি ফোন আসলো, স্যার তাড়াতাড়ি আসেন। একটা মরা বাচ্চা এসেছে, দেখে যান।
আমি তড়িঘড়ি করে গিয়ে দেখি আসলেই বাচ্চার কিচ্ছু নাই। এই বাচ্চা নিয়ে আশা করা বোকামি রোগীর লোকদের বুঝিয়ে রুমে চলে আসবো এমন সময় মনে হলো, তবুও একবার শেষ চেষ্টা করে দেখি।
যদি আল্লাহ সহায় হোন।
একথা বলেই বাচ্চাকে উপরে নিয়ে মাহমুদ হুজুর (এসএসএমও)কে আম্বু ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে আমি সিপিআর দেওয়া শুরু করলাম।
সঙ্গে নার্স ও মিডওয়াই তাদের সবটুকু সাপোর্ট দিয়ে আমাদের কাজে সাহায্য করতে লাগলেন।
সিপিআর দিতে দিতে যখন দেখা যাচ্ছে কিছুই হচ্ছে না তখন অনেকেই বলতে লাগলো শুধু শুধু চেষ্টা করে লাভ নাই, স্যার। তবুও আমাদের চেষ্টার ত্রুটি ছিলো না।
এইভাবে প্রায় ৩০-৪০ মিনিট সিপিআর দেওয়ার পরে বাচ্চা জোরে করে একটা শ্বাস নিলো, আলহামদুলিল্লাহ। এইভাবে হার্ট বিটসহ সব আল্লাহর রহমতে ফিরে পেলাম।
আল্লাহর কি লিলা খেলা আল্লাহ চাইলে কিনা করতে পারেন।
এরপরে যখন স্যাচুরেশন সহ সব কিছু মেইনটেইন হচ্ছিল তখন আমরা বাকি চিকিৎসা দিয়ে বাচ্চাকে অ্যাম্বুল্যান্সে উঠিয়ে রাজশাহী পাঠিয়ে দিলাম। আশা রাখি আল্লাহর ইচ্ছায় বাচ্চাটা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি তার ফিইসবুক আইডিতে আরও লিখেন, উপজেলা পর্যায়ে একটা সুন্দর টিম নিয়ে এমন কাজ করতে পারায় আসলেই সন্তুষ্টির বিষয়। আল্লাহ আমাকে সেই তৌফিক দিয়েছেন বলে আমি গর্বিত।
ফেইসবুকে তিনি লিখেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে। গ্রামে গঞ্জে বাসায় বাসায় এখনো অহরহ নরমাল ডেলিভারির নামে এমনভাবে বাচ্চা মারা যাচ্ছে, তা খেয়াল রাখতে হবে। বাসায় যদি ডেলিভারিতে বেশি সময় লাগে তাহলে বাসাতে আর চেষ্টা না করাই ভালো।
এখন সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্সপার্ট মিডওয়াই রয়েছেন। যারা নরমাল ডেলিভারি করাতে এক্সপার্ট। যদি আপনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন তাহলে আপনার বাচ্চা অনেকটাই সেইভ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
ডা. ফরিদ এইচ খানের এই কাজে জন্য ফেইসবুক সহ বিভিন্ন মহল তার প্রসংশা করছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন