এইচ.টি তোফাজ্জল, গৌরীপুর প্রতিনিধিঃ
প্রতি বছর বোরো মৌসুমে ধান কাটা শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রায় চার মাস অনবাদি পড়ে থাকে কৃষকের ফসলের জমি। বিষয়টি দেখে ভালো লাগে না কৃষক শেখ সাদীর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা, এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না এমন ঘোষণায় অনুপ্রাণিত হয়ে কৃষক শেখ সাদী বোরো ও আমন মৌসুমের মধ্যবর্তী সময়ে পতিত পড়ে থাকা জমিতে আউস আবাদের উদ্যোগ নেন।
ধান বিক্রির টাকায় আউস আবাদের জন্য বাড়ির পাশে ব্রি ৪৮ জাতের ধানের বীজতলা তৈরি করেন।
ইচ্ছা জাগে নিজের জমি চাষের পাশাপাশি গ্রামের অন্য কৃষকদেরও বিনামূল্যে ধানের চারা দিবেন আউস আবাদ করার জন্য।
নিজের এমন ইচ্ছার অনেকটা রাজকীয় বাস্তবায়ন করেছেন ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মাওহা ইউনিয়নের করমড়িয়া গ্রামের কৃষক শেখ সাদী।
গত বৃহস্পতিবার নিজবাড়িতে গ্রামের প্রান্তিক কৃষকদের ডেকে এনে বিনামূল্যে আউসের চারা বিতরণ করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লিপি প্রধান অতিথি থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ৩৫ জন কৃষককে আউসের চারা তুলে দেন।
শেখ সাদীর আউশের বীজতলায় ১০০০ কাঠা জমিতে আউস আবাদের চারা রয়েছে। গ্রামের কৃষক যেন আউসের চারা পায় সেজন্য নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে হটলাইন চালু করেছেন। এই হটলাইনে ফোন করে শুধুমাত্র গৌরীপুরের কৃষকরা চারা নিতে পারবেন।
করমড়িয়া গ্রামের কৃষক গোলাপ মিয়া বলেন, এই অঞ্চলে আউস চাষ হয় না বললেই চলে। চারার সংকটের কারণে কৃষকের আগ্রহ কম থাকে। তবে এবার শেখ সাদী বিনামূল্যে চারা দেয়ায় কৃষক আউস আবাদে আগ্রহী হয়েছে। আমি নিজেও বিনামূল্যে এক বিঘা জমির চারা নিয়েছি আবাদের জন্য।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে চলতি আউস মৌসুমে উপজেলায় ২২০ হেক্টর জমিতে আউসের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষককে আউশ চাষে আগ্রহী করতে দেয়া হবে প্রণোদনা। পাশাপাশি আউস আবাদ বাড়াতে কৃষক শেখ সাদীর বিনামূল্যে চারা বিতরণের বিয়ষটি আউশ চাষ বাড়াতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
কৃষক শেখ সাদী বলেন, দেশের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় অনুপ্রাণিত হয়ে বোরো চাষের পর অনাবাদি জমিতে আউসের উদ্যোগ নেই পরে গ্রামের আরও কৃষকদের বলি আউস আবাদ করতে। কিন্তু তারা আউসের চারার সংকটের কথা বলে। পরে আমি সিদ্ধান্ত নেই সব কৃষককে বিনামূল্যে চারা দিব। আজকে আমার সে ইচ্ছার বাস্তবায়ন হল। ৩৫ জনকে চারা দেওয়া হয়েছে। আশপাশের কৃষক ভাইদের আমার মোবাইল ফোন নাম্বার দেওয়া আছে। চাইলে আরও অর্ধশতাধিক কৃষককে চারা দিতে পারব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লিপি বলেন, আমরা আউস উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের প্রণোদনা দিয়ে থাকি। আউশ আবাদ বাড়াতে কৃষক শেখ সাদীর উদ্যোগ খুব ব্যতিক্রম লাগলো। সাধারণত আমরা সরকারি ভাবে বিনামূল্যে সার বা বীজ বিতরণের অনুষ্ঠানে যাই। কিন্ত একজন কৃষক নিজের উদ্যোগে এমন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন এতে আমি খুব আনন্দিত।
Tags
বাংলাদেশ