চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোটি টাকা মূল্যের মার্কেট দখল করে জোরপূর্বক দোকান ঘর নির্মাণ, প্রকৃত মালিককে হয়রানী ও হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (০৭ জুন) দুপুরে জেলা শহরের পাওয়ার হাউস মোড়স্থ একটি অফিসে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে মার্কেট ভাড়া নিয়ে জোরপূর্বক দখল করে দোকান ঘরের অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী আবু সাইদ নয়ন।
সংবাদ সম্মেলনে আবু সাইদ নয়ন বলেন, ২০১৫ সালের ০২ সেপ্টেম্বর নবাবগঞ্জ ক্লাব কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে ক্লাব সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলা কিনে নেয়। ২০২৩ সালের ০৬ জুন ফুড ক্লাবের পরিচালক আব্দুল বারী অসৎ উদ্দেশ্যে বেআইনীভাবে রাঁধুনি হোটেল ভবনটি মূল ফটকের তালা ভেসে জোর করে রাজমিস্ত্রি দ্বারা ছোট ছোট দোকান ঘর তৈরি করার চেষ্টা করছে। এমন সংবাদ শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করি এবং প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বাড়ি চলে আসি। এমনকি নবাবগঞ্জ ক্লাবের সম্পাদককে বিষয়টি অবহিত করি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আব্দুল বারী ঘন্টাদুয়েক পরে আবারও লোকজন নিয়ে রাঁধুনি হোটেলের প্রধান ফটকে তালা ভেঙ্গে বেআইনি ভাবে প্রবেশ করে আবার কাজও শুরু করে। পরে আমি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে নাহিদকে নিয়ে যাই। রাজমিস্ত্রির কাজে বাধা দিলে আব্দুল বারী অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং নাহিদকে লাথি, কিল, ঘুষি মরে জখম করে। বিষয়টি জানার পরেও ক্লাব কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ০৬ জুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী আবু সাইদ নয়ন বলেন, দখলদার আব্দুল বারীর বড় ভাই আবু তাহের আমার নিকট ২০১৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাধুনি হোটেলের ৩,০০০ স্কয়ার ফিট জায়গা ৮০,০০০ টাকা ভাড়া নেয়। কিন্তু ৯ মাস ভাড়া প্রদান করার পর থেকে আজ অবধি কোন ভাড়া প্রদান করেনি। ভাড়া চাইতে গেলে আবু তাহের ও আব্দুল বারী বিভিন্ন রকম টালবাহানা করে ও আমাকে ভয়ভীতি দেখায়। আমি নিরুপায় হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করি, যা বর্তমানে চলমান রয়েছে৷
তিনি আরও বলেন, আমার টাকার বিশেষ প্রয়োজন হওয়ায় আমি আব্দুর রহমানের নিকট কেনা জায়গার অর্ধেক বিক্রয় করি। আব্দুর রহমান একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বিভিন্ন মার্কেটে তার বিসমিল্লাহ নামে একাধিক গার্মেন্টস দোকান আছে। যা তিনি অনেক বছর যাবৎ সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। অর্ধেক পজিশন কেনার কারনে তার উপর মিথ্যা চাঁদাবাজীর মামলা দিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে আব্দুল বারী। এমনকি আব্দুল বারী অভিযোগ করেছেন, তিনি ব্যাংকে ৫ লাখ টাকা জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে সোনালী ব্যাংকের সামনে গেলে আব্দুর রহমান এবং রুহুল চেয়ারম্যানের লোকজন রুবেল, ওয়াহেদ, বাদশা, শাহআলমের বিরুদ্ধে যে ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছেন, তা বানোয়াট ও পুরোপুরি মিথ্যা।
সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান আবু সাইদ নয়ন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, আবু সাইদ নয়ন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিসমিল্লাহ গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহমান, ব্যবসায়ী রবিউল আলম রুবেলসহ অন্যান্যরা।
এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, ফুড ক্লাবের মালিক আব্দুল বারী। তিনি জানান, আমার স্ত্রীর নামে কেনা জায়গায় দোকান ঘর নির্মান করতে গেলে বাধা দেয় বিসমিল্লাহ গার্মেন্টেসের মালিক আব্দুর রহমান। এমনকি আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। এমনকি বেধড়ক মারধর করে ৫ লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়েছে।
এবিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।