Daily News BD Online

নওগাঁর মান্দায় মৈনমে মায়ের সামনে ছেলেকে খুন


নওগাঁ প্রতিনিধি :

নওগাঁ জেলার মান্দায় পরিকল্পিত ভাবে আনোয়ার হোসেনকে হত্যা করেছে। হত্যার পর এলোপাতাড়ি ভাবে মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করে আপন চাচা ও চাচাত ভাইসহ কয়েকজন, এ বিষয়ে কেহ মুখ না খোলার কারণে হত্যার আসল রহস্য থেকে যাচ্ছে অন্তরালে।


গত (২১ জুন) বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার সময় মান্দা উপজেলার ৬নং মৈনম ইউনিয়নের রামপুর মন্ডলপাড়ায় মৃত আশরাফ আলীর ছেলে আনোয়ার (৩২)কে তার নিজ ঘরের দরজার সামনে পরিকল্পনাকারীরা নির্মমভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথাসহ সারা শরীরের এলোপাতারি ভাবে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে মাটিতে ফেলে দেয় এবং পায়ের রগ কেটে দেয়, তার আপন মায়ের সামনে। পরবর্তীতে হত্যাকারীরা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মেরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে আনোয়ারের বন্ধু সোহেল রানা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে গেলে, সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


নিহত আনোয়ার হোসেনের মা জানান, তার ছেলে বাড়ীতে এসে ঘরের শিকল খুলতেই আকর্ষিক ভাবে পূর্ব পরিকল্পিত মোয়াজ্জেম মোহরীর নির্দেশে তার ভাতিজা আমিনুল রামদা দিয়ে স্বজোরে তার  মাথায় কোপ দেয় তখন মোয়াজ্জেম,মান্নান সহ অনেক ক,জন রামদা,হাঁসুয়া ও শুলফি দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কোপাতে থাকে এবং শুলফি দিয়ে ঘুতো মারতে থাকে। সেখানে আনোয়ার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।  তার মা অনেক অনুনয়,বিনুনয় তাদেরকে করেছেন, আসামীরা তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে সেখানেই তিনি জ্ঞান হারিয়েছেন বলে জানান। তিনি তার ছেলের হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবী করে বলেন,কয়েক দিন থেকে পরিকল্পনাকারীরা তার ছেলেকে মেরে ফেলার জন্য পরিকল্পনা করছিলো কিন্তু তিনি কিছুই বুঝে উঠতে পারেন নাই। তিনি বলেন, এর মুল পরিকল্পনাকারী মোয়াজ্জেম মহরী,তার নির্দেশে তার চোখের সামনে তার একমাত্র কলিজার টুকরোকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে হত্যাকারীরা। হত্যার স্বীকার আনোয়ারের বোনসহ এলাকাবাসীরা হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবী করেন।


আনোয়ার হোসেনের বন্ধু সোহেলরানা জানায়, ঘটনার দিন আনোয়ার তার সাথে পার্শবর্তী ডাকাতের মোড়ে বসে ছিলো। হঠাৎ করে মোয়াজ্জেম মোহরী নিহত আনোয়ারের মোবাইলে ফোন দিয়ে তাকে বাড়িতে ডাকে, এরপর আনোয়ার বাড়ীতে যায়। এর প্রায় ২ঘন্টা পরে সে মোবাইল ফোনে জানতে পারে তার বন্ধু আনোয়ারকে তার চাচারা ও চাচাতো ভাইয়েরা মিলে মেরে ফেলেছে। সে দৌড়ে আনোয়ারের বাড়িতে গিয়ে দেখে, রক্তাক্ত অবস্থায় আনোয়ার মাটিতে পড়ে আছে। সে বুকে টেনে নিয়ে বুঝতে পারে আনোয়ার এখনো জীবিত আছে।  তাই সে চিল্লাচিল্লি করে ভ্যানগাড়ীতে উঠিয়ে চিকিৎসার জন্য প্রথমে মৈনম বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তারের পরামর্শে মাইক্রো যোগে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে মোবাইল ফোনে জানতে পারে তার বন্ধু আনোয়ার আর বেঁচে নেই। গত শনিবারে আইনি কাজ শেষে নিহত আনোয়ারের লাশ গ্রামের বাড়ীতে দাফন করা হয়েছে। সে তার বন্ধুর হত্যার কারীদের বিচার এবং কঠোর শাস্তির দাবী করেন।


হত্যার পরিকল্পনাকারী মোয়াজ্জেম মোহরীর আত্নীয়রা জানায়, ঘটনার ২/৩দিন আগে থেকে তাদের চাচা ভাতিজার মধ্যে এক নিরব দন্ড লক্ষ করেছেন তারা। এলাকাবাসী বলছেন, আনোয়ার হোসেন মদ খেয়ে তার নিজ স্ত্রীকে মারধর করেছে এ জন্য তাকে চাচারা ও ভাতিজা মিলে শাসন করতে গিয়ে একটু বেশি হয়ে গেছে।

শাসন করতে হাড়-কাটি রামদা দিয়ে মাথায় কোপ দেওয়া, এ কেমন শাসন হলো, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তারা চুপসে যায়,আর কোন উত্তর দিতে পারে না তারা। স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, এই হত্যার অন্তরালে বড় কোন রহস্য লুকিয়ে আছে পরিকল্পনাকারীদের, যাহা বর্তমানে অনুমান করা কাহারো পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তারা বলেন, আসামীদের রিমান্ডে নিলে এই হত্যাকান্ডের মুল রহস্য জানা যাবে বলে তারা জানান।


এ বিষয়ে মান্দা থানার তদন্ত অফিসার মেহেদী মাসুদ এর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, এই পরিকল্পিত হত্যার বিষয়ে হত্যার স্বীকার আনোয়ারের মা বাদী হয়ে ৮জনকে আসামি করে, মান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে। আসামীদের গ্রেফতারের জন্য জোর প্রচেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন