Daily News BD Online

টাঙ্গাইলে অসময়ে যমুনার ভাঙনে অর্ধশত প‌রিবার নিঃস্ব

 


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইল সদরের চরপৌলিতে বন্যা শুরু হওয়ার আগেই অসময়ে বাঁধের বাইরে যমুনায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ক‌য়েক‌দি‌নের ভাঙ‌নে ইতোম‌ধ্যে ৩৫ পরিবারের সবাই শেষ সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। বাড়ি ঘর হারিয়ে কেউ খোলা আকাশের নিচে, কেউ বা অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছেন। সাহায্য নয়, বাঁধের কাজ শেষ করার দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দাবি, আকস্মিক ভাঙনে তিন কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।

পানি উন্নয়নের বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ভাঙনরোধে জরুরি বরাদ্দের জন্য ঢাকায় আবেদন করা হয়েছে। আর স্থানীয় সংসদের সদস্যের দাবি, আড়াইশ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌলী এলাকায় চায়না বাঁধের মতো বাঁধ নির্মাণ হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, নাগরপুর থেকে সদর উপজেলার চরপৌলী পর্যন্ত জিও ব্যাগ ফেলে যমুনার তীরে বাধ দেয়া হয়েছে। অপর দিকে, কালিহাতীর পাথরঘাট থেকে আলীপুর পর্যন্ত ব্লক ফেলে যমুনার তীরে বেড়িবাঁধ করা হলেও মাঝখানে ১৬২৫ মিটার বাঁধ না থাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, মঙ্গলবার আকস্মিক বাধের বাইরে ভাঙন শুরু হয়। এতে সবার ঘর-বাড়িসহ গাছ পালা আসবাব পত্র যমুনায় মুহূর্তেই বিলীন হয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত যুবক তাঁত শ্রমিক আব্দুল কাদের জিলানি বলেন, তিন দশকে চার বার বাবা দাদার ভিটে হারিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে আকস্মিক ভাঙনে তাদের ৬০ শতাংশ বাড়ি যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। সহায় সম্বল হারিয়ে রাক্ষুসে যমুনার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি। আবাসস্থল ছাড়া কিভাবে নিজের দুই ছেলে ও এক মেয়েকে মানুষ করবেন তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি।

লালবানু বেগম বলেন, যমুনার ভাঙনে বাড়ি-ঘর টানতে টানতে জীবন প্রায় শেষ। মঙ্গলবার ভাঙনের পর দুই দিন ধরে আসবাব পত্র টানছি। রান্না করতে পারিনি ঠিকমতো খেতেও পারিনি। ক্ষুধার যন্ত্রণায় ছোট ছোট নাতি নাতনিরা কান্না করছে।

হুনুফা বেগম বলেন, চোখের সামনেই ঘরের টিন, চেয়ার টেবিল ও গাছ পালা যমুনায় চলে গেলো। কিছুই রক্ষা করতে পারলাম না। আমরা খাবার ও টাকা চাই না। আমরা বাঁধ চাই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ৩০ বছর ধরে কাকুয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে যমুনার ভাঙন শুরু হয়। ইতোমধ্যে প্রায় দেড় কিলোমিটার চরপৌলি গ্রাম যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার ভাঙনে ৩৫ পরিবারের প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাকি বাঁধের কাজ শেষ করার জোর দাবি জানাই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন