স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস, এখন একজন কবরে, অন্যজন কারাগারে


চট্টগ্রাম নগরের পোশাককর্মী জ্যোৎস্না বেগম হত্যাকাণ্ডের জট খুলেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটির চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের তদন্তে উঠে আসে স্বামী পরিচয় দিয়ে একসঙ্গে বসবাস করা এক পুরুষ সহকর্মী নয়ন বড়ুয়া (২৯) এর হাতে খুন হন জ্যোৎস্না।

ভুক্তভোগী জ্যোৎস্নার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর কবিরহাট নলুয়ার চর ভুঁইয়ার হাট এলাকায়। তার বাবার নাম আবুল কালাম। অভিযুক্ত নয়নের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার পৌরসভা ১ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম গহিরা এলাকায়। তার বাবার নাম মিলন বড়ুয়া।

একই পোশাক কারখানায় করতেন চাকরি। সেখানে দুজনের মধ্যে হয় পরিচয়। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হলেও তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। তারপর সেই সম্পর্ক আরও গভীর হয়। মাসখানেক আগে নয়ন-জোৎস্না স্বামী-স্ত্রী প‌রিচ‌য়ে চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড থানার বন্দরটিলা আয়েশা মায়ের গলির কামাল ম্যানসনের নিচতলায় একটি এককক্ষের বাসা ভাড়া নেয়। এরপর স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে সেখানে বসবাস শুরু করেন। এ সময়ে উভয়ের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও হয়। 

জানা যায়, জ্যোৎস্নার আগে স্বামী ছিল। নয়নের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি আগের স্বামীকে তালাক দেন। এরপর নয়নকে স্বামী হিসেবে পেতে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে থাকেন। প্রয়োজনে নয়নকে ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্যও বলেন। অন্যদিকে চট্টগ্রামের রাউজান এলাকায় আগে থেকে স্ত্রী-সন্তান থাকায় নয়ন তার প্রেমিকা জোৎস্নাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান।

জ্যোৎস্না বিয়ের জন্য চাপ দিলে উভয়ের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ চলে আসছিল। বিয়ে না করলে জোৎস্না তার পুরুষ সহকর্মী নয়নকে মামলার হুমকিও দিয়েছিলেন। এরপর একাধিকবার সবকিছু ফাঁস করে দেওয়া এবং মামলার হুমকি দিতে থাকেন জ্যোৎস্না। এটি নিয়ে বিরোধ এবং বাকবিতণ্ডার জেরে শনিবার সকালে জ্যোৎস্নাকে গলাটিপে হত্যা করে নয়ন।

হত্যাকাণ্ডের পর নয়ন তার প্রেমিকা জ্যোৎস্নার মরদেহ কম্বল মুড়িয়ে দড়ি ও ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলে। পরবর্তীতে মরদেহটি একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ঢুকায়। বস্তাবন্দি মরদেহটি প্রথমে রিকশাযোগে কিছুদূর নেয়। এরপর অটোরিকশাযোগে লালখান বাজার এলাকায় মরদেহটি ফেলে চলে যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন