নাগরপুরে নুরজাহান হত্যার রহস্য উদঘাটন, মাষ্টার মাইন্ডসহ ২জন গ্রেপ্তার

 


নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের নাগরপুরে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস নুরজাহান বেগম (৬৫) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ । স্বামী সন্তানহীন নুরজাহান বেগমের সম্পত্তি গ্রাস করতে না পেরে তাকে পড়নের কাপড় পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘাতকরা। পড়ে নিহতের স্বর্ণালংকার নিয়ে নির্জন তামাক ক্ষেতে লাশ ফেলে রেখে খুনিরা পালিয়ে যায়। এহত্যা মামলার মাষ্টার মাইন্ডসহ কিলিং মিশনে অংশ নেয়া ২ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, ভোলা জেলার চর ফ্যাশন থানার ফকির কান্দির (নতুনঘাট) গ্রামের মৃত আপতাব মোল্লা ওরফে নাক কাটার ছেলে মো. কালাম মিয়া (৩৮) কে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে গত ৫ মে  (সোমবার) গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের নিবির জিজ্ঞাসাবাদে কালাম হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তার (কালাম) জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যাকান্ডের মুল মাষ্টার মাইন্ড  নাগরপুর উপজেলার বাঘের বাড়ীর গ্রামের দুদু মিয়া ওরফে দুদু মেম্বারের ছেলে মো. তোফায়েল হোসেন ওরফে তোফা মেম্বার (৪২) কে  ৬ মে (মঙ্গলবার) রাতে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার সকালে (৮ মে) সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব তথ্য জানান নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম।
পুলিশ সূত্রে জানা য়ায, উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের খামারধল্লা গ্রামের স্বামী সন্তানহীন নুরজাহান বেগমের সম্পত্তির উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে পাশ্ববর্তি বাঘের বাড়ি গ্রামের তোফা মেম্বারের। বিভিন্ন কলাকৌশল ও চাপ প্রয়োগ করেও নুরজাহান বেগমের সম্পত্তি কব্জা করতে ব্যর্থ হয় ওই তোফা মেম্বার। এর পড় থেকে নুরজাহান বেগমকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে। গত ১২ মার্চ সকাল ১০টার দিকে একটি  প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে বাড়ী থেকে অন্যের জমিতে পড়ে থাকা গম, ভুট্রা ও পায়রার শিষ সংগ্রহ করতে যান নুরজাহান বেগম। সন্ধা হবার পরেও সে বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা তার খোঁজ করতে থাকেন। খোঁজাখোঁজির এক পর্যায়ে ওই রাত সাড়ে আটার দিকে স্থানীয় রতনের তামাক ক্ষেতের মধ্যে তার মরদেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাতিজা বাদী হয়ে নাগরপুর থানায় গত ১৩ মার্চ অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার মোটিভ ও এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পুলিশ ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে গত ৫ মে  ঢাকার যাত্রা বাড়ি থেকে মো. কালাম মিয়া কে গ্রেফতার করে। পরে আটক কালাম আদালতে ১৬৪ ধারা অনুযায়ী জবান বন্ধি দেয়। এছাড়া তার জবানবন্ধি অনুযায়ী ভাড়াকৃত যাত্রাবাড়ি বাসা থেকে নুরজাহানের হাতের রুপার বালা জব্দ করে পুলিশ। এদিকে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যাকন্ডের মুল মাষ্টার মাইন্ডের নাম প্রকাশ করে। পর দিন ৬ মে রাতে অভিযান চালিয়ে বাঘের বাড়ি নিজ বাড়ি থেকে তোফা মেম্বার কে গ্রেফতার করা হয়।

নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে জানান, ক্লুলেস বৃদ্ধা নুরজাহান হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত ২ জন কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে মো. কালাম মিয়া আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। অপর আসামি তোফা মেম্বার পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে। এ হত্যা কান্ডে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন