স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) :
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গোড়াই এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে জবাই করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর স্বামী সুজন মিয়া পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিবাগত রাত ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। তাদের দুই সন্তান রয়েছে।
এরপর শুক্রবার (৩০ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার বাশতৈল এলাকা থেকে ঘাতক স্বামী সুজনকে (৩২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহত কবিতা আক্তার (২৫) ওই এলাকার একটি পোষাক কারখানার গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলায়। কবিতা ও তার স্বামী সোহাগপাড়া এলাকায় মুসা মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতো।
এলাকাবাসী জানায়, সুজন মিয়া ও তার স্ত্রী কবিতা আক্তার দুই সন্তান নিয়ে মুসা মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতো। কবিতা ওই এলাকার একটি পোষাক কারখানায় কাজ করতো। তার স্বামী সুজন পেশায় একজন মেকানিক। গতকাল রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সুজন মিয়া উত্তেজিত হয়ে বাসায় থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কবিতাকে জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন ঘটনা টের পেয়ে মির্জাপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
কবিতার বাবা কদম আলী সরদার জানান, একই এলাকার আলীমুদ্দিনের ছেলের সাথে প্রায় ১৫ বছর আগের পারিবারিকভাবে সুজন ও কবিতার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১০ বছরের ছেলে কাইয়ুম ও সুমাইয়া নামে ৮ বছরের মেয়ে রয়েছে। ৮ বছর আগে সুজন কাজের সন্ধানে পরিবার নিয়ে মির্জাপুর উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে আসে। সংসারে টানাপোড়ান থাকায় কবিতা দু‘বছর আগে হামিম গ্রুপে চাকরি নেন। চাকরি নেয়ার পর থেকেই সুজন নিয়মিত উপার্জন কমিয়ে দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। বৃহস্পতিবার ঝগড়া শুরু হলে মেয়ের ডাক-চিৎকারে এগিয়ে গেলে দেখেন মেয়ের নিথর দেহ পড়ে আছে। সুজন তাৎক্ষণিক পালিয়ে যায়। পরে সুজন ও তার মা-বাবাসহ তিনজনকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী পলাতক ছিল। এই ঘটনায় নিহত কবিতার বাবা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এরপর ঘাতম স্বামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।