এ.বি.এম.হাবিব, নওগাঁ প্রতিনিধি : পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুতলার পাকা ঘর ভেঙ্গে চুরমার করেছে দুষ্কৃতিকারীরা। গতকাল শুক্রবার (৯ মে) নওগাঁর মান্দায় আনুমানিক ভোর ৫টার সময় খালেক মাসুদ ঢাকা সুপ্রিমকোর্টের এ্যাডঃ ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত তার গ্রামের বাড়িতে এমন নারাক্কা জনক ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগও পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কাশোপাড়া ইউনিয়নের ভরট্র কাঠের ডাঙ্গা গ্রামের খালেক মাসুদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। তখন বাড়িতে অবস্থান করছিল তার স্ত্রী ও চার বছরের শিশু। পূর্বশত্রুতার জের ধরে দুস্কৃতিকারীরা পরিকল্পনা করে প্রথমে বাড়ি থেকে বের হওয়ার দরজায় তালা মেরে,সিসি ক্যামেরা ৪টি খুলে নেয় ও ১টি ভেঙ্গে ফেলে,দুতলায় উঠে এসব ভাংচুর চালায়। দুতলার ছাদে রাখা ৯/১০ ব্যান টিন, মাপ করে কাটা লোহার রডসহ মিস্ত্রিদের কাজের যাবতীয় সরঞ্জামদী চুরি করে নিয়ে যায়। খালেক মাসুদের স্ত্রী চিৎকার করলে তারা দুঃস্কৃতিকারীরা তাকে ধারালো হাঁসুয়া উচিয়ে খুন করে ফেলবে বলে ভয় দেখায় বলে তিনি জানান। খালেক মাসুদ সেদিন রাতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলো।
ভোরে নওগাঁয় পৌঁছাতেই তার স্ত্রী মোবাইল ফোনে তাকে এসব ঘটনা জানালে, তিনি নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ এ ফোন করে সহযোগিতা চাইলে মান্দা থানায় বিষয় গুলো জানিয়ে সেখান থেকে গ্রামের দুরত্ব বেশি হওয়ায় পুলিশ পৌঁছানোর আগেই সবকিছু ভেঙ্গে চুড়ে লুটপাট করে নিয়ে যায় দুস্কৃতিকারীরা। পরবর্তীতে পুলিশ ও সাংবাদিকেরা সেখানে পৌঁছে খালেদ মাসুদের স্ত্রীকে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখে, পিছনের দরজাও ছিটকিনিতে আটকানো দেখে খুলে দিয়ে তার কাছে বিস্তারিত জেনে,পুলিশ ও সাংবাদিক দুষ্কৃতিকারীরা খালেক মাসুদের আপন ভাই হাসান আলী,সম্রাট,হাসানের ছেলে হৃদয়, নয়নসহ অজ্ঞাত লোকজন এসে দরজায় তালা লাগিয়ে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ভাংচুর, লুটপাট চালায়। বেশী চিল্লাচিল্লি করলে তাকেও খুন করার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে হাসান-সম্রাট এর কাছে জানতে গেলে, তারা পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনেই গলা উচিয়ে বলে, আমরাই ভেঙ্গেছি এবং খালেক মাসুদকেও মারবো এতে যা হয় হবে এবং বহু রকমের উগ্রতা ভাব দেখায়। তাদের এমন আচরণে সকলেই অবাক হয়ে যায়। তারা বলে খালেক মাসুদের বাড়ি তাদের জায়গা বলে দাবী করে। কিন্তু গত ৮/৯ মাস আগে তাদের দাবী ছিলো বাড়ির পশ্চিম দিকে প্রাচীর ১ হাত বেশি দিয়েছে। সে মতাবেক দু,পক্ষের আমিন এনে মাপযোগে দেখা যায় তাদের দাবী সঠিক নয়। বাড়ীটি প্রায় ২৪ বছর আগে তৈরি করা। বর্তমানে এসে পুরো বাড়ীর জায়গা কি করে, দাবী করা হয় সে কথার কোন জবাব তারা দিতে পারে না। এরপরও পুলিশ তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা অবনতি না করার জন্য বলে, চলে যায়।
খালেক মাসুদ এ বিষয়ে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান, তিনি বলেন, তাদের দাবী মতাবেক ৫লক্ষ টাকা চাঁদা দিলে এসবের কিছুই হতো না। আজ তার লুটপাট, ভাংচুরে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতি করেছে। তিনি সঠিক বিচার এবং তার ক্ষতি পূরণের দাবী করেন।
স্থানীয়রা জানান, এই পুরো গ্রামের মধ্যে এদের ভাই ভাইদের বিরোধের বিষয়টি সবারই জানা। বহুবার এ নিয়ে বৈঠক বা শালিশ হয়েছে কিন্তু কেহ কোন সুরাহা করতে পারে নাই বা তারা মানে না। নাম প্রকাশ না কারার শর্তে স্থানীয়রা জানায়, এই হাসান নামের যে ভাই রয়েছে সে ঢাকায় ড্রাইভারি করে। সে ঢাকা থেকে আসলেই কোন না কোন অঘটন ঘটায়। এদের বিষয় নিয়ে গ্রামেও একটা অশান্তি। এ জন্য তাদের কাছ থেকে সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এলাকার লোক হিসেবে যেটুকু সম্পর্ক ঐ টুকুই তাদের সাথে। তারা আরো বলেন, এদের জন্য গ্রামের আইনশৃঙ্খলার অবনতি, কবে যেন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকায় রয়েছে বলে তারা জানান।
মান্দা থানার অভিযোগের তদন্ত অফিসার এসআই ওয়াদুদ জানান, তদন্ত করার পর এ সকল বিষয়ে সঠিক আইগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।