হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

 


ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেলজিয়ামে পালিয়ে থাকা সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রী নূরান ফাতেমার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২৩ জুন) দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন। এদিন দুদকের পক্ষে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আল আমিন পৃথক দুই আবেদনে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। 
হাছান মাহমুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদনে বলা হয়, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৭ আসনের সাবেক এমপি হাছান মাহমুদ (৬১) বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী হিসেবে এবং সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তিনি অসাধু উপায়ে অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন ১ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৮ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন করেন। সেই সম্পদ ভোগদখলে রেখে অপরাধমূলক অসদাচরণ করেছেন। এছাড়া তার নিজ যৌথ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে মোট ৯টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৭ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করে তা হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তরের মাধ্যমে অর্থপাচার করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা: মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(১) (ঘ) ও ৫(১) (৬) ধারা লঙ্ঘন করে ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমতাবস্থায় আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেওয়া একান্ত জরুরি।

 

অপরদিকে নূরান ফাতেমার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদনে বলা হয়, নূরান ফাতেমা অবৈধভাবে ৫ কোটি ৫২ লাখ ৭৮ হাজার ১৯০ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগদখল করেছেন, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারার লঙ্ঘন। এছাড়াও, তিনি তার ব্যক্তিগত, যৌথ এবং তার প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত মোট ৫৬টি ব্যাংক হিসাবে ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকা অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছেন, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

 

এই পরিস্থিতিতে, আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা অত্যন্ত জরুরি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন