ফুলবাড়ীতে বৈরী আবহাওয়ায় ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে কৃষকের পাকা ধান

 

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে শেষ মুহূর্তে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন কৃষক। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই ক্ষেত থেকে ধান কেটে মাড়াই করার পর দ্রুত ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন কিষাণ-কিষাণি। ছবি : আমিনুল ইসলাম

 

আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) :
ধান কাটা মারার পর শুরু হয়েছে ঝড় ও বজ্রপাতসহ বৃষ্টি। এতে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে শেষ মুহূর্তে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন কৃষক। ক্ষেতেই ঝরে যাচ্ছে পাকা ধান। ঝড়বৃষ্টি শুরুর আগেই কিছু কৃষক ফসল কেটে বাড়ি আনলেও সেগুলো মাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে পারছেন না। পানিতে ভেজা থাকছে মাটি। এজন্য এলাকার সড়কগুলো ব্যবহার করছেন তারা।
কৃষকরা বলছেন, ভেজা ও নরম মাটিতে ধান শুকাতে দিলেই তা আরও ভিজে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে বারবার তুলে রাখতে হয়। ক্ষেতের অধিকাংশ ধান পুরোপুরি পেকে গেছে। কাটতে না পারায় ঝড়-বাতাসে শীষ থেকে ঝরে যাচ্ছে ফসল। আবার কেটে বাড়ী আনলেও মাড়াই, পরিষ্কার ও শুকাতে না পারায় ধান থেকে চারা গজিয়ে যাবে। নূরে আলম সিদ্দিকী, তারাপদ রায়, মহিদুল ইসলাম, পরিক্ষীত চন্দ্র রায়, হিরেন্দ্র নাথ বর্মন, আমিনুল ইসলামসহ বিভিন্ন এলাকার অনেক কৃষক একই ধরনের কথা বলেছেন।

তাদের ভাষ্য, অন্যবারের তুলনায় এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদে লাভের আশা করছেন তারা। বাজারে আশানুরূপ দাম পেলে ঋণ পরিশোধ করে পরিবার নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ আশা পূরণ নিয়ে সংশয়ে আছেন জানিয়ে কৃষকরা বলছেন, যে অবস্থা, তাতে নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে উদ্বেগে আছেন। কমে গেছে দাম। প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে সাড়ে ৮৫০ টাকায়। এর চেয়ে খরচ বেশি হয়েছে। ফের ঋণে আটকে পড়তে হবে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, উপজেলায় এবারে ১৪ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবাদও হয়েছে একই পরিমাণ জমিতে। ফলন ভালো হয়েছে। আবাদকৃত জমির ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৫ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন ধান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ মো. শাহানুর রহমান বলেন, সাধারণ বৃষ্টিতে তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। শিলাবৃষ্টি হলেই সমস্যা। ৮০ শতাংশ পেকে গেলেই ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কৃষকদেরকে। এ পর্যন্ত এলাকার ৯০ ভাগ ক্ষেতের ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। চলছে মাড়াই ও শুকানোর কাজ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন