নওগাঁয় মজুমদার পেট্রোল পাম্পে অবৈধ ভাবে গ্যাসের রিফিলের প্রতিবাদে সভা অনুষ্ঠিত


এ.বি.এম.হাবিব (নওগাঁ) :
 ন্যূনতম নিরাপত্তা বিহীন, নিয়ম নীতিকে কোন তোয়াক্কা না করে, অবৈধভাবে বিভিন্ন কোম্পানির গ্যাস রিফিল করে এবং বাজারে কম দামে, দীর্ঘদিন যাবত বিক্রি করে আসছে  নওগাঁর মজুমদার এলপিজি নামক এক প্রতিষ্ঠান। এর প্রতিবাদে জেলা বেসরকারি এলপি গ্যাস পরিবেশক সমিতি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বুধবার  (১৮ জুন) সকালে নওগাঁ শহরের স্থানীয় হোটেল আয়োজন নামক একটি রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সমিতির সভাপতি মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে সমিতির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, কোষাধক্ষ্য অসিত কুমার সাহা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, নওগাঁ শহরের বিসিক শিল্প নগরীর পাশে মজুমদার এলপি গ্যাস নামক এক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বসুন্ধরা ওমেরা, যমুনা, বেক্সিমকো, জে এম আই, গ্রীনসহ বিভিন্ন কোম্পানির সিলিন্ডার ওজন কম দিয়ে কম দামে কোয়ালিটি বিহীন অটো গ্যাস রিফিল করে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে গ্যাস বাজারজাত করে আসছেন। একদিকে গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে সরকার ভ্যাট ট্যাক্স আয়কর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বেসিক শিল্প নগরীর পাশে অবৈধভাবে স্যাটেলাইট প্ল্যান বসিয়ে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর যাবৎ এই অবৈধভাবে ব্যবসা করে আসছে। আমরা তার অবৈধ ভাবে এই ব্যবসা বন্ধের সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। পরে তারা এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। এ সময় উত্তরবঙ্গের লোয়াবের প্রতিনিধিগন সব কোম্পানির প্রতিনিধিগণ পরিবেশক গন উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে অভিযোগকৃত মজুমদার এলপি গ্যাসের প্রোপাইটার নিপেন্দ্রনাথ মজুমদারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, যাহা হয়েছে, যাহা করেছি, তাহা বর্তমানে সকলেই প্রায় জানে। তাই  এ বিষয়ে কোন সাংবাদিকদের সাথে, কোন প্রকার কথা, বলবেন না, বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, নওগাঁর মরহুম আব্দুল জলিল পার্কের পশ্চিমে (রাউন্ড বোর্ডের) দক্ষিনে নওগাঁ মজুমদার এলপিজি প্রায় ৫বছর যাবত এই অবৈধ ব্যবসা করে আসছে। তার পেট্রোল পাম্পের দক্ষিনে টিনের গেটের ভিতরে গোপনে প্রতি রাতে বসুন্ধরা ওমেরা, যমুনা, বেক্সিমকো, জে এম আই, গ্রীনসহ সকল কোম্পানির সিলিন্ডারে ওজন কম দিয়ে, কম দামে কোয়ালিটি বিহীন অটো গ্যাস রিফিল করে,গ্যাসের সিলেন্ডার গুলো ভরিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাক ভর্তি করে আসছে।

গত (১৪জুন) কুষ্টিয়া চৌরাস হাইওয়ে পুলিশ জি-গ্যাস ৪৪১টি সিলিন্ডার,বসুন্ধরা ৩১টি সিলিন্ডার, ওমেরা ৬৬টি সিলিন্ডার, যমুনা ৩৯টি সিলিন্ডারসহ যশোর-ট ১১-২৮০৭, একটি ট্রাক আটক করেন। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে ড্রাইভার ও হেলপার জানায়,তারা নওগাঁ মজুমদার পেট্রোল পাম্প থেকে, মজুমদার এলপিজি থেকে দীর্ঘদিন থেকে এগুলো গ্যাসের সিলিন্ডার আনা-নেওয়া করছে বলে জানায় এবং একটি মজুমদার এলপিজি'র মেমোও দেখায়। পুলিশ কুষ্টিয়ার এসব গ্যাসের ডিলারশীপদের ফোন করে ডেকে নিয়ে, জানতে পারেন সেগুলো অবৈধ কিন্তু এর মামলার বাদী কেহই হতে চাননা এবং স্থানীয় সেচ্চাসেবক দলের নেতাসহ সকলের পরামর্শ ক্রমে ড্রাইভার রবিউল ও হেলপার সুমন মন্ডলসহ ট্রাকটি ছেড়ে দিতে পুলিশ বাধ্য হন। এ বিষয় গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ট্রাকের নম্বরসহ ট্রাক, মজুমদার এলপিজির মেমো ও গ্যাসের সিলেন্ডার ব্যাপক ভাবে প্রচার হলে নওগাঁর বেসরকারি এলপি গ্যাস পরিবেশক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সদস্যদের নিয়ে নওগাঁ শহরের স্থানীয় হোটেল আয়োজন নামক একটি রেস্টুরেন্টে জরুরি আলোচনা ও প্রতিবাদ সভা করেন। সেই আলোচনা সভা শেষে এই অবৈধ  ভাবে বিভিন্ন কোম্পানির নামে গ্যাসের সিলিন্ডার ভর্তি ও বাজারজাত বন্ধে এবং তদন্ত সাপেক্ষে তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য লিখিত স্মারক লিপিও জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার বরাবর প্রদান করেন।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলার বেসরকারি এলপি গ্যাস পরিবেশক সমিতির সভাপতি মনোয়ার হোসেন জানান,তারা জরুরি ভিত্তিতে হোটেল আয়োজনে আলোচনা ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। এবং এর প্রতিকার ও আইনি ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য নওগাঁ জেলা প্রশাসক ও নওগাঁ পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। কিন্তু এখনো কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলেও তিনি জানান।

নওগাঁর পুলিশ সুপার সাফিউল সারোয়ার জানান, এ মুহুর্তে তিনি ব্যাস্ত আছেন,তাই স্মারকলিপি বিষয়ে মনে করতে পারছেন, না তবে পরবর্তীতে বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহম্মদ আব্দুল আওয়াল সাহেব মুটো ফোনে জানান,এর আগেও বগুড়া থেকে একজন সাংবাদিক ফোন করেছিল,কিন্তু এখনো কোন স্মারকলিপি তিনি পান নাই, তবে এ বিষয়টি তিনি ক্ষতিয়ে দেখবেন বলে জানান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন