মো: লুৎফর রহমান (খাজা শাহ্) : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে আধ্যাত্মিকতা সাধক নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলা’র দরবার শরিফে হামলার ঘটনায় করা দুটি মামলায় এ পর্যন্ত মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলা’র দরবার শরিফে হামলায় ভক্ত রাসেল মোল্লা নিহতের ঘটনায় করা মামলায় সর্বশেষ আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানান গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোঃ রাকিবুল ইসলাম।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপাড়ার শান্ত কাজী (১৯) এবং ফরিদপুরের সালথা থানার ঘটরকান্দা গ্রামের মোঃ আনিছুর রহমান (৩০)।
ওসি মোঃ রাকিবুল ইসলাম জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর ‘নুরাল পাগলা’র দরবারে হামলার ঘটনায় রাসেল মোল্লা নিহত হয়ে ছিল। ঘটনার তিন দিন পর সোমবার রাতে রাসেলের বাবা আজাদ মোল্লা গোয়ালন্দ ঘাট থানায় অজ্ঞাতপরিচয় চার হাজারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। সর্বশেষ দুজনসহ এ মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওসি বলেন, দরবার শরিফে হামলার ঘটনায় শুক্রবার রাত ১২টার দিকে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই মো. সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় একটি মামলা করেন।
সেই মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় সাড়ে তিন হাজারজনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুটি মামলায় মোট ২০ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় এজন্য ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে জানান ওসি রাকিবুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শুক্রবার নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে রাসেল মোল্লাসহ ভক্তরা অবস্থান করছিলেন। জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ বাজার আনসার ক্লাবে ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি ও তৌহিদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বেলা ৩টার দিকে অতর্কিতভাবে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা চালানো হয়।
বাদী আজাদ মোল্লা বলেন, 'ঘটনার সময় একপর্যায়ে ১৫ থেকে ২০ জন দেয়াল টপকে দরবারের ভেতরে ঢুকে গেটের পাশে থাকা তার বড় ছেলে রাসেল মোল্লাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। দরবারে থাকা অন্তত ৫০ জন ভক্ত-মুরিদানকে বেধড়ক মারধর ও কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানেও দ্বিতীয় দফা রাসেলকে মারধর করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় রাসেলকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।'
মামলার বাদী আজাদ মোল্লার দাবি, অজ্ঞাত আসামিরা নুরাল পাগলার দরবারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মারধর করে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে। দরবার শরিফে ভক্তদের মিলাদ মাহফিলে দেওয়া ৪০ লক্ষাধিক টাকা, ৫০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার, ৫৫ লাখ টাকার মূল্যবান জিনিসপত্রসহ ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
Tags
জাতিয়
