স্টাফ রিপোর্টার, কানাইঘাট (সিলেট) থেকে : সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের লামাপাড়া গ্রামের এক মুদি দোকানদের পরিবারের ওপর প্রাণনাশ ও লাশ গুম করার হুমকি দিয়েছে সিলেট মহানগর ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক পলাতক ছাত্রলীগ সভাপতি সাব্বির আহমেদ (৩৩) ও তার মা ছাইয়ারা বেগম, হোসাইন আহমেদ এবং সামুল আহমেদ। তারা প্রায়ই সাদেক আহমেদ (৪০), পিতা: মৃত মাওলানা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। বিষয়টি এলাকায় সর্বজনবিদিত হওয়ায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, সাদেক আহমেদের বাড়ির সংলগ্ন সরকারি রাস্তা ও সরকারি খালের পাশে তিনি কিছু ফুলের গাছ, ফলের গাছ, বোরা গাছ এবং মুর্তা বাগান লাগিয়েছিলেন। কিন্তু খালের অপরপাশের বসতবাড়ির মালিক ছাইয়ারা বেগম (৬৫), স্বামী মৃত মাওলানা অব্বাস আলী। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই স্থানীয় বখাটে হোসাইন আহমেদ (২৫), পিতা মৃত মালিক মিয়া, এবং সামুল আহমেদ (৩৫), পিতা শামসির আলী ঐ বাড়িতে আসা-যাওয়া শুরু করে এবং মাঝেমধ্যে রাতযাপনও করে।
গত ২৬/০৭/২০২৫ তারিখে সাদেক আহমেদ রাজাগঞ্জ বাজারে অবস্থানকালে ছাইয়ারা বেগম, হোসাইন আহমেদ ও সামুল আহমেদ মিলে তার লাগানো গাছ ও চারা কেটে ফেলতে থাকে। খবর পেয়ে সাদেক ঘটনাস্থলে গেলে তারা অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে এবং ধারালো দা ও সুপারি গাছের লাঠি দিয়ে তাকে আক্রমণ করে। তার চিৎকার শুনে স্থানীয় দুদু মিয়া চৌধুরী (৭০), লজন মিয়া চৌধুরী (৫০), নজরুল ইসলাম চৌধুরী (৪০)সহ প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সাদেকের প্রাণ রক্ষা হয়। তবে গাছ ও চারাগুলো কেটে উপড়ে ফেলে তারা নিজেদের বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় মেম্বারকে জানালে তিনি উভয় পক্ষকে সালিশে বসার প্রস্তাব দেন। সাদেক তা মেনে নিলেও অপর পক্ষ নানা তালবাহানা করে। গ্রাম্য মুরব্বিরাও চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। এর পর থেকে হোসাইন ও সামুল প্রায় রাতেই সাদেকের দোকান ও ঘরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পরিবারের শিশু সন্তানরা আতঙ্কে কেঁদে ওঠে। সাদেক বাইরে গিয়ে দেখলে তারা দ্রুত নিজেদের গেট বন্ধ করে ভেতরে চলে যায়। এতে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
উল্লেখ্য, ছাইয়ারা বেগমের দুই ছেলে ও এক মেয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। বড় ছেলে কবির আহমেদ আয়ারল্যান্ডে সাব্বির আহমেদ কানাডায় এবং মেয়ে তাহমিনা পর্তুগালে থাকেন। তারা অর্থসম্পদে প্রভাবশালী হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে আসছেন। ২০১৭ সালে সাব্বির আহমেদ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বেআইনিভাবে সরকারি খাল ভরাট করে নিজ বাড়ির রাস্তা নির্মাণ ও খালের জমি দখল করেছিলেন। সে সময় সাদেক বাঁধা দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই তাকে নানা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত আসামিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল আউয়ালকে জানান, অভিযোগের সততা নিশ্চিত করে বলেন তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
