বাজারে কমছে না সবজির দাম


নিজস্ব প্রতিবেদক : চার মাস ধরে রাজধানীর বাজারে সবজির দাম উচ্চ পর্যায়ে স্থির রয়েছে। ক্রেতারা বলছেন, সবজির মৌসুম নয় বা বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট - এমন কারণ দেখিয়ে বিক্রেতারা লাগামহীন দাম ধরে রেখেছেন। বাজারে শুধু মাত্র পেঁপে ছাড়া সব সবজির দাম ৮০ থেকে ১০০ এর ঘরে। আজ শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির বাড়তি দাম দেখা গেছে।

আজকের বাজারে প্রতিকেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় বেগুন (গোল) প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, বেগুন (লম্বা) প্রতি কেজি ১০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি (ছোট) প্রতি পিস ৬০ টাকা, গাজর প্রতি পিস ১৩০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, ধন্দুল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ৪০ টাকা এবং কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি এক চাকরিজীবী। তিনি বলেন, প্রতিটি সবজির দাম ৮০ থেকে ১০০ টাকার ঘরে, আবার কিছু কিছু সবজি তার চেয়েও বেশি দাম। বিগত চার মাস ধরে অতিরিক্ত বেশি দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। এত বেশি দামে সবজি কিনতে পারছে না সাধারণ ক্রেতারা। আগে যেখানে এক কেজি সবজি কিনতাম এখন অতিরিক্ত বেশি দাম হওয়ার কারণে আধা কেজি সবজি কিনছি। সাধারণ ক্রেতাদের আমার মত একই অবস্থা। 

মালিবাগ বাজারের আরেক ক্রেতা বলেন, বিগত চার মাস ধরে সবজি বিক্রেতারা বলে আসছে, এখন বেশিরভাগ সবজির মৌসুম নয় তাই দাম বেশি। কিন্তু চার মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও সবজির দাম বাড়তি। তাহলে মৌসুমটা শুরু হচ্ছে কখন আর শেষ হচ্ছে বা কখন? এত বেশি সবজির দাম, তবুও বাজার মনিটরিংয়ের কোন উদ্যোগ কখনো দেখলাম না। 

সবজির দাম বৃদ্ধি বিষয়ে মগবাজারের সবজি বিক্রেতা বলেন, টানা কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারণে খেত ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর প্রভাবে আরো কিছুটা দাম বেড়েছে সবজির। এছাড়া বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ হওয়ায় সেই সবজিগুলোর দাম বাড়তে যাচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই নতুন সবজি উঠতে শুরু করবে, তখন থেকে সবজির দাম কমে যাবে। বর্তমানে বাজারে চাহিদার তুলনায় সবজি সরবরাহ কম, যে কারণে সব ধরনের সবজির দামই বাড়তি যাচ্ছে। 


চট্টগ্রামে সবজির দাম এখনো চড়া, বেড়েছে ডিম-মুরগির দাম

গত দুই সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন সরবরাহ এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই কম-বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এতে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। যার কারণে বেড়েছে দাম। এছাড়া দুর্গাপূজা উপলক্ষে তিন-চার দিন ছুটি ছিল। ফলে কমেছে ভারত থেকে আমদানি করা বেশকিছু সবজি।  

গত দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে অধিকাংশ সবজিই বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। এরমধ্যে আবার ১০ টাকা বেড়েছে ডিম ও মুরগির দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার ও কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজার ঘুরে সবজির বাজারের এ চিত্র দেখা গেছে। তবে ভ্যানে, ভ্রাম্যমাণ দোকানে শাকসবজির দাম কেজিতে অন্তত ৫টাকা কমে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বাজারে প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ২০০ টাকায়, গাজর ৭০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, দেশি শসা ৭০ টাকা, করলা ১২০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১০০ টাকা, পটল ৮০ থেকে ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে প্রায় ২০০ টাকা কমে ১৬০ টাকায় এসেছে। ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।

এছাড়া শিম ২২০ টাকা, মূলা ১০০ টাকা, বাঁধাকপি ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মানভেদে লাউ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চালকুমড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি ২০০ টাকা, শাকের মধ্যে কচুশাক ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা ও লালশাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলেন, এই সপ্তাহে বেগুন, গাজর, চিচিঙ্গার দাম কিছুটা বেড়েছে। শীতকালীন সবজি আসা শুরু করেছে, পুরোদমে আসেনি এখনো, তাই দাম একটু বাড়তি। কিছুদিন পর এসব সবজির দামও কমে আসবে।

বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, সোনালি ৩০০ টাকা, কক মুরগি ২৬০ থেকে ২৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৩০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৭০ টাকা।

এছাড়া ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতিডজন ২২০ টাকায়। গরু ও মহিষের মাংষ বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে বাগদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। গলদা চিংড়ি ৮৫০ ও ছোট চিংড়ি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় রুই ৫০০ টাকা, মাঝারি ৪৬০ ও ছোট রুই বিক্রি হয় ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাতলা মাছ ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোরাল মাছ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০, পাবদা ৪০০, রূপচাঁদা ৮৫০ ও টেংরা ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির ওজনের ইলিশ ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন