ডিএম‌পির বনানী থানার ওসি ও তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালত তলব ক‌রে‌ছে

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম।


মো: লুৎফর রহমান (খাজা শাহ্) : সম্প্রতি মানবপাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠনের (বায়রা) সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলামকে গ্রেফতারের পর কোন এখতিয়ারে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তা জানতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে (আইও) তলব করেছেন আদালত। গতকাল (১২ নভেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। আদেশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। আদালতে বাদীপক্ষে আব্দুল খালেক মিলন, সুমন ভুইয়া ও জিল্লাল হোসেন প্রমুখ আইনজীবী শুনানি করেন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে বিদেশ থেকে ফেরার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ ফখরুলকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে বনানী থানায় হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই বনানী থানার ওসি তাকে ছেড়ে দেয়। তাকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি রহস্যেঘেরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুবেল সারওয়ার জানান, ফখরুলকে একজন আইনজীবীর তত্ত্বাবধানে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিলো। শর্ত অনুযায়ী তিনি দুই দিনের মধ্যে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইবেন।

গত ৪ নভেম্বর বনানী থানায় আরইউএল ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং পার্টনার মো. রুবেল হোসেন এই মামলাটি করেছেন। এতে ফখরুল ইসলাম এবং তার সহযোগী জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মানবপাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এতে তিন কোটি দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এজহারে বাদী উল্লেখ করেন, ফখরুল ইসলাম ও জসিম উদ্দিন তাকে মালয়েশিয়ার নিউ ভিশন গ্রিন ল্যান্ড এসএনডি, চাই চাং ফুড ইন্ডাস্ট্রি এসএনডিসহ ভালো ভালো কোম্পানিতে শ্রমিক পাঠানোর মিথ্যা আশ্বাস দেন। মৌখিক চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ২৭ মে ৫৫ জন কর্মী মালয়েশিয়ায় প্রেরণের জন্য কর্মীপ্রতি পাঁচ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে নগদ মোট তিন কোটি দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা তিনি আসামিদের হাতে তুলে দেন। এরপর আসামিরা মোট ২৮ জন কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠালেও চুক্তি মোতাবেক কোম্পানিতে কাজ না দিয়ে তাদের অন্য জায়গায় নিয়ে আটকে রাখে, ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্যাতন করে এবং পুনরায় টাকা দাবি করে। বাদীর চাপের মুখে শ্রমিকদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেও আসামিরা কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি। তাদের কাছে বাদীর আরও এক কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। আসামিরা সেই টাকা ফেরত না দিয়ে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগেও প্রতারণা ও মানবপাচার আইনে মামলা করা হয়েছিল যা তিনি আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে পার পেয়েছি‌লেন বলে জানা যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন