পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মারপিট ও রাতে বসতবাড়ীতে আগুন


এ.বি.এম.হাবিব : নওগাঁয় নারিকেল গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মারামারি, থানায় মামলা হওয়ার পর রাতে অসহায় রবিউলের বসত বাড়ীতে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয় পার্শবর্তী দুর্বৃত্তরা। 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার দুর্গাপুর উত্তরপাড়া আঃ মতিন তার স্ত্রী ও ৪ ছেলে, তাদের স্ত্রী ছেলে মেয়েদের নিয়ে বসবাবাস করেন। তাদের পার্শবর্তী বাড়ীর স্বপন ও গুলজার মাটির বাড়ী ভেঙ্গে ইট দিয়ে পাকা বাড়ি করে কিন্তু তারা যাতায়াতের জায়গা রাখে নাই। তাই মতিনের জায়গা দিয়েই দীর্ঘদিন থেকে যাতায়াত করে আসছে।  এমনবস্থায় মতিনের বহু পুরোনো একটি নারিকেল গাছ সেখানে থাকায়, তাদের যাতায়াতে অসুবিধা হয় বলে,মাঝে মধ্যেই ঝগড়াঝাটি,গোন্ডগোল হতো। আঃ মতিন ও তার ছেলেরা জানায়,এমনিতেই স্বপন,গুলজার ও তাদের পরিবারের লোকজনেরা তাদের জমির উপর দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াত করে আসছে,এরমধ্যে আবার নারিকেল গাছ নাকি তাদের অসুবিধা হয় বলে, তারা বার বার গাছটি কেটে ফেলতে আসে। গাছটি তার জায়গাতেই লাগানো আছে এবং গাছটি ফল দিতে শুরু করেছে বিধায়, কেটে ফেলা সম্ভব নয় বলে জানান।

গত (২১ নভেম্বর) ২০২৫ ইং তারিখে বৈকাল অনুমান ৪টার সময় স্বপন,গুলজার,জিহাদ,ইমন এবং তাদের পরিবারের মহিলা জীবন নেছা,মিতু,ফাতেমা সকলে মিলে নারিকেল গাছটি কেটে ফেলতে আসলে সেখানে, আঃ মতিন বাড়িতে না থাকায়,তার স্ত্রী, ছেলে রবিউল ও রবিউলের স্ত্রী শিখা বাঁধা দিতে গেলে,তাদেরকে স্বপন,গুলজারগংরা সবাই মিলে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে এবং এক সময় মারতে মারতে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখমসহ ও বিবস্ত্র করে দেয়।  তারা জানান,সে সময় তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে, স্বপন রবিউলকে জবাই করার জন্য বাড়ি থেকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আসলে,রবিউল, তার মা ও স্ত্রী মাটি থেকে উঠে, সেই ধারালো অস্ত্র কেড়ে নিতে লাগলে, ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে অস্ত্রটি স্বপনের কানে লেগে সামান্য কেটে যায় বলে স্থানীয়রা জানায়। অন্যেরা মতিনের বাড়ীতে ঢুকে টাকা পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট করতে শুরু করে বলে জানান। স্থানীয়রা ও  তাদের ভাগভাগিরা সহযোগিতা করে আহতদের নওগাঁ সদর হাঁসপাতালে চিকিৎসার নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন। 

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানায় উভয় পক্ষে লিখিত এজাহার দেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করতে শুরু করেন। গ্রেফতারের ভয়ে আঃ মতিন ও তার ছেলেরা আত্মগোপনে থাকলে, গত ২৪ নভেম্বর মতিনের আরেক ছেলে রাসেল ও তার স্ত্রী রাতে ঘুমিয়ে পড়লে  উপরোক্ত আসামীরা মতিনে অনুপস্থিতিতে, মতিনের বাড়ীতে ঢুকে আবারও লুটপাট শুরু করে। এমন সময় রাসেল ও তার স্ত্রী টের পেয়ে তার বাবার ঘরে আসামিদের দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করলে,তাদেরকেও আসামিরা ওখানে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট শুরু করে এবং ঘর থেকে বাহির করে দেয়। রাসেল জানায়, গুলজারের হাতে পেট্রোলের বোতল ছিল  তা দিয়ে তার বাবার ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তাদের চিৎকারের এলাকাবাসী এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যার্থ হলে একটা, এলাকাবাসীর ফোন দিয়ে ফায়ার সার্ভিসে কল দিলে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভাতে সক্ষম হয় কিন্তু ততোক্ষনে বাড়ীটির সবকিছু পুড়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তারা জানান। ভুক্তভোগীরা জানান, পরের দিন থানায় বাড়িতে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়ার লিখিত এজাহার করলে,অফিসার ইনচার্জ আগের মারামারির মামলা দু,পক্ষেরই গ্রহন করেছেন কিন্তু পরবর্তীতে আগুন লাগানোর মামলাটি গ্রহন করেন নাই বা করবে না বলে তাদেরকে জানিয়েছেন। তারা বলেন,আসামিরা এখনো তাদেরকে হত্যা করার হুমকি দিয়েই চলছে এবং সকল মামলা প্রত্যাহার করার জন্য ভয়ভীতিও দেখাচ্ছে। 

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত অফিসার খোরশেদ আলম জানান,দু,পক্ষের পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে কিন্তু বাড়ীতে আগুনের বিষয়ে অন্য অফিসার তদন্ত করছেন বলে তিনি জানান। এস আই আমিরুল জানান,মারামারির বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে, বাড়িতে আগুনের বিষয়টি দেখেছি বলে জানান। বাড়িতে আগুন লাগানোর বিষয়ে মামলা হয় নাই কেন,এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নুরে আলম সিদ্দিকী এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মারামারি বিষয়ে দু,পক্ষের মামলা নেওয়া হয়েছে, বাড়িতে আগুন লাগানোর বিষয়টি তদন্ত চলছে,তদন্ত সাপেক্ষে সেই বিষয়েও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন