পিরোজপুরের নাজিরপুরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে এক তরুণীর অনশনের খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার শেখমাঠিয়া ইউনিয়নের গড়ঘাটা গ্রামের আজহার আলী শেখের বাড়িতে।
অনশন নেওয়া তরুণী হবিগঞ্জ জেলার লাখাইল উপজেলার লাখাইল গ্রামের হাফিজ মিয়ার মেয়ে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) গড়ঘাটা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে ওই পরিবার। বাড়ির সামনে তরুণী রাস্তায় অবস্থান করছেন। সাংবাদিকদের খবর পেয়ে বাড়িতে চলে আসেন ছেলে মা ও স্থানীয়রা। এ সময় তরুণীর ওপরে মারমুখী অবস্থান নেয় পরিবার ও স্থানীয়রা।
অনশন নেওয়া তরুণী তানিসা তাবাসসুম স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেলে আত্মহত্যা করবেন বলে জানিয়েছেন। তরুণী জানান, আমার শ্বশুর আজহার আলী শেখের ছেলে আব্দুল্লাহ শেখ চাকরির সুবাদে হবিগঞ্জে যাতায়াত করতেন। সেখানে থেকে আমাদের পরিচয়। এরপর আমাদের তিন মাসের প্রেম। এরমধ্যে গত রোজার ঈদের দিন আমাকে ফোন করে ওর বাসায় আসতে বলে। আব্দুল্লাহ শেখ ব্যাচেলর থাকে। সঙ্গে থাকে আরও কয়েকজন। তারা সবাই গ্রামের বাড়িতে চলে গেলে সেই সুযোগ আমাকে ডেকে নেন বাসায়। তখন জোর করে ধর্ষণ করে। এরপর স্থানীয় এক হুজুরকে ডেকে ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে করেন। এরপর এক সপ্তাহে ধরে আমরা ওই বাসায় থাকি। সেখানে আমরা স্বামী-স্ত্রীর মতো মেলামেশা করি।
তানিসা বলেন, কিছুদিন আগে আমি জানতে পারি আব্দুল্লাহর বিয়ে ঠিক হয়েছে। এটা জেনে আব্দুল্লাহকে কল দিই। সেই থেকে ও আমার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দিয়ে আমাকে তালাক দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর থেকে আমার সঙ্গে আর যোগাযোগ না হলে আমি আব্দুল্লাহর গ্রামের বাড়ি আসি। ওর পরিবার ও স্থানীয়রা আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। আমাকে যদি আব্দুল্লাহ ও তার পরিবার স্ত্রীর মর্যাদা না দেয় তাহলে আত্মহত্যা করব।
স্থানীয়রা জানান, এমন ঘটনা আমরা এর আগে দেখিনি, তাই দেখতে আসছি। আবার অনেকে বলেছেন, তার কাছে যদি বিয়ের ডকুমেন্টস বা কাবিননামা থাকে তাহলে আমরা স্থানীয়রা বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে একটা পর্যায়ে যাব। এমন প্রেম, ছবি, মেলামেশা আজকাল হয়ে থাকে। অডিও রেকর্ড শুনে আর ছবি দেখে তাকে বিয়ে করেছে এটা কীভাবে বুঝব।
ছেলে আব্দুল্লাহর মা জানান, ওই মেয়েকে আমরা চিনি না, আর আমার ছেলে ওইখানে কখনও চাকরি করে নাই। আর ওই যদি আমার ছেলের বউ হয় তাহলে কাবিননামা দেখাতে বলেন। কাবিননামা দেখালে আমি বউ হিসেবে মেনে নেব।
নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহমুদ আল ফরিদ ভূইয়া জানান, এলাকায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। কোনো পক্ষ থেকে অভিযোগ পায়নি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।