সিদ্ধিরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক মামুন মাহমুদ


এসএম মিরাজ হোসাইন টিপুঃ

গতকাল শনিবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে দায়িত্বরত গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক, অধ্যাপক মামুন মাহমুদ।

শনিবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিটাগাংরোড তাজমহল চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সাথে এই মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপির তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, শহীদ প্রসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পরিবার একটি আদর্শবান পরিবার। তারা কখনোই অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি।

গণতান্ত্রিক এই বাংলাদেশে জনগণের ভোটে নির্বাচিত  তিনবারের সফল সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজের সুচিকিৎসার জন্যেও ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের সাথে কোন ধরনের আপোষ করেনি। 

এমনকি তিনি বিনা চিকিৎসায় নিজেকে একেবারে শেষ করে দিয়েছেন তবুও স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের কাছে মাথানত করেননি। 

বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর জেল খাটিয়েছে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকার, শুধু তাই নয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।

বিগত ১৭ বছরে বিএনপি’র অসংখ্য নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দেয়াসহ গুম ও খুনের মত সীমাহীন অন্যায়/অপরাধের সাক্ষী হয়েছে এদেশের জনগণ। 

এমন একটি আদর্শবান ও ধৈর্যশালী রাজনৈতিক দলের একজন কর্মী হতে পেরে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি। 

২৪ এর ৫ ই আগস্ট স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনে বিএনপি’র প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী নিজেদের প্রাণ দিয়েছেন, এদেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য।   

দীর্ঘ ১৭ টা বছর ফ্যাসিবাদ সরকার এদেশের জনগণকে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে।

তিনি আরোও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রূপরেখা দিয়েছেন। 

আমরা আশা করি সাধারণ মানুষ যেনো সম্পূর্ণ নির্ভয়ে,  নির্বিঘ্নে, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠ পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে পারেন।

কারণ দেশে এখনো গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আমি নারায়ণগঞ্জ ৩ ও ৪ আসনের এমপি পদপ্রার্থী। আমার দল আমাকে এই দুটি আসনের যেকোনো একটি আসনে মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচন করবো, তাছাড়া দল যাকেই মনোনয়ন দিবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করব।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি'র এই নেতা বলেন, বিগত ১৭ বছর সাংবাদিকদের সাথে এইভাবে আলোচনা করতে পারিনি। আজকে এমন একটি পরিবেশে  সাংবাদিকদ ভাইদের সাথে আলোচনা করতে পেরে আমি  খুব আনন্দিত ও গর্বিত।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা এই দেশ তথা এদেশের জনগণ ও সমাজের আয়না। প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপনারা নির্ভীক কলম সৈনিক হয়ে আপনাদের লিখুনীর মাধ্যমে প্রকৃত সত্য তুলে ধরবেন। আমি আপনাদের যে কোন বিষয় ও যেকোনো প্রয়োজনে সর্বদা পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ। 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, আগস্টের পর বিএনপি'র যেসব নেতাকর্মীরা বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়েছিলেন  তাদের বিরুদ্ধে আমার দল  সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছেন।

শুধু তাই নয় তাদের বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে মামলাও করা হয়েছে, এমনকি সারাদেশে ৭ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

হাইব্রিড নেতাকর্মীদের বিষয়ে তিনি বলেন, যারা বিএনপিতে নতুন করে যোগ দিয়েছেন এবং দলের দূঃসময়ে যারা সর্বদা পাশে থেকে হামলা, মামলা ও জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের মতো ত্যাগী নেতাকর্মীদের দোষী বানিয়ে তাদেরকে দল থেকে দূরে সরিয়ে নিজেদের অবস্থান করে নিয়েছেন, সময় হলে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বিএনপি এদেশের মাটি ও মানুষের এবং অন্যতম বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল,আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা ও দলের  ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান দেশে আসলে দেশের প্রেক্ষাপট আরোও পরিবর্তন হবে ইনশাআল্লাহ। 

আপনারা জানেন, ইতিপূর্বে বিএনপি'র  নারায়ণগঞ্জ জেলার পূর্বের কমিটি তদন্ত সাপেক্ষে বিলুপ্ত করা হয়েছে।

তাই কেউ যদি অন্যায় করে অথবা অন্যায়ের সাথে সংযুক্ত থাকে তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মামুন মাহমুদ বলেন, যারা নিরপরাধ সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকদের মামলা দিয়ে আসামি করেছে, আমি তার প্রতিবাদ করেছি এবং এখনো আমার সেই প্রতিবাদ চলমান রয়েছে ও থাকবে।

আমি ডিসি ও এসপিসহ ওসিদেরকে বিভিন্ন সময় মামলা করার আগে সঠিক তদন্ত করে তারপর মামলা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। 

এসপি সাহেবকে বলেছি যারা নিরপরাধ তাদেরকে যেনো মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং যারা মামলায় নিরীহ মানুষকে আসামি করেছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে আমাদের জোর দাবি রয়েছে।

উক্ত মতবিনিময় সভায়  সিদ্ধিরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার  সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন