স্থানীয় কৃষক ও পাইকাররা হচ্ছেন লাভবান
সৌরভ মাহমুদ হারুন, ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার গোমতী নদীর চরে উৎপাদিত বারোমাসি সাদা জাপানি মুলা এখন স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় পাইকাররা চরাঞ্চল থেকে বিপুল পরিমাণ মুলা ক্রয় করে ট্রাকে করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে সরবরাহ করছেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলার আদর্শ সদর ও বুড়িচং উপজেলার গোমতী চরের বিশাল অঞ্চলে সারা বছর জুড়ে শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন নানা ধরনের সবজি উৎপাদন করেন কৃষকরা। সবজির পাশাপাশি সারা বছর মুলা চাষ করে কৃষকরা ভালো লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় বাজারের চাহিদা ছাড়িয়ে এসব মুলা দেশের বড় শহরগুলোতেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
গোমতীর তীরবর্তী কৃষক জামাল উদ্দিন বিকম জানান, “এখন সারা বছরই গোমতী চরে মুলা চাষ হয়। আগে যেটা শুধু শীতকালীন সবজি ছিল, এখন সারা বছরই ফলন পাওয়া যায়। কৃষকরা মুলা চাষে ভালোই লাভবান হচ্ছেন।”
মুলা চাষের প্রধান এলাকা হিসেবে রয়েছে— শিমাইলখড়া, বালিখাড়া, ভাংতি, পূর্বহুড়া, কাহেতরা, নানুয়ার বাজার, মনোয়ারপুর, কংশনগর, রামচন্দ্রপুর, কুসুমপুর, কাঠালিয়া, মীরপুর,
এছাড়া আদর্শ সদরের আমতলী, কাচিয়াতলীসহ আশপাশের অনেক জায়গা।
বালিখাড়ার কৃষক মাহাবুব আলম পলাশ জানান— “প্রতি কানি জমিতে মুলা চাষে মজুরিসহ খরচ পড়ে ৩০–৩৫ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে লাভও থাকে যথেষ্ট।”
স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ী মো. শাহ আলম বলেন, “মুলা এখন সারা বছরই উৎপাদন হচ্ছে। আমরা প্রতি কানি ৬০–৭৫ হাজার টাকায় মুলা কিনে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠাই। ট্রাক ভাড়া ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ৪০ হাজার টাকা গেলেও প্রতি চালানে ১০–১৫ হাজার টাকা লাভ থাকে।”
ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কালাকচুয়া এলাকার পাইকার মারুফ ও জাহাঙ্গীর জানান, গোমতী চরের মুলা এনে মহাসড়কের পাশে ডুবায় এগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে ট্রাকে লোড করা হয়। বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি, মোকাম ইউনিয়নের নারায়নসার, কালাকচুয়া, ডাকলাপাড়া, কাবিলা, মনঘাটা, মনিপুর, বারিকোটা, কোরপাই, সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মুলা সংগ্রহ করা হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের বড় শহরের পাশাপাশি বৃহত্তর নিমসার বাজারেও গোমতী চরের মুলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
ব্যবসায়ী শাহ আলম আরও বলেন, “গত চার মাস ধরে প্রতিদিনই মাঠ থেকে মুলা কিনে প্রক্রিয়াজাত করে চট্টগ্রাম–কক্সবাজারের বিভিন্ন বাজারে পাঠাই। প্রতি কেজি মুলা পাইকারি দরে ১৮–২২ টাকায় বিক্রি হয়।”
