গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সরকারি নিয়ম না মেনে নিলাম ছাড়াই একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরোনো টিনসেড ঘর ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে ৮ ডিসেম্বর সোমবার উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা শিক্ষা অফিস পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৮নং জহরের কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন হাওলাদার কোনো প্রকার সরকারি নিলাম প্রক্রিয়া ছাড়াই বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত টিনসেড ঘরটি তার স্থানীয় এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক এ ঘটনায় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহজাহান সিরাজকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পৃথকভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার দুই সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি করেন, যার প্রধান হলেন সহকারি শিক্ষা অফিসার বাসুদেব বিশ্বাস।
সরেজমিন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় সপ্তাহখানেক আগে ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী ঘরটি ক্রয় করে অপসারণ করে নিয়ে গেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় ব্যক্তি অভিযোগ করেন, কোনো নিয়ম-নীতি না মেনেই প্রধান শিক্ষক ঘরটি বিক্রি করেছেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী সমর অধিকারী জানান, প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন—উপজেলা অফিসের অনুমতি নিয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে। তবে বিক্রির সম্পূর্ণ অর্থ এখনো প্রধান শিক্ষকের কাছেই আছে।
প্রধান শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন হাওলাদার বলেন, ঘরটি পরিত্যক্ত ছিল। স্থানীয়দের জানিয়ে ও শিক্ষা অফিসকে অবহিত করে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। বিদ্যালয়ের উন্নয়নে এই টাকা ব্যয় করা হবে।
তবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শেখর রঞ্জন ভক্ত বলেন, তিনি ঘর বিক্রির বিষয়ে কিছু জানেন না। তার ভাষায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন বা আসবাবপত্র নিলাম ছাড়া বিক্রির কোনো বিধান নেই। বিষয়টি জেনে তদন্ত কমিটি করেছি। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক বলেন, জহরের কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনসেড ঘর বিক্রির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছ। নিয়মবহির্ভূতভাবে সরকারি সম্পত্তি বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
